• কমছে গুরুত্ব! নতুন বছরে সদর হাসপাতাল থেকে সরতে চলেছে চক্ষু ও ইএনটি বিভাগ
    বর্তমান | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: নতুন বছরে সদর হাসপাতাল থেকে সরবে চক্ষু এবং ইএনটি বিভাগ। জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের নয়া অ্যাকাডেমিক ভবন চালু হয়ে গেলেই ওই বিভাগ দুটি সদর হাসপাতাল থেকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চলে যাবে। এমনটাই জানিয়েছেন জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের সুপার কল্যাণ খাঁ। তিনি বলেন, মার্চের মধ্যে নয়া অ্যাকাডেমিক ভবন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তরের কথা। ওই ভবনে মেডিক্যালের যাবতীয় প্রশাসনিক কাজকর্ম হবে। কলেজের পঠনপাঠনও হবে। নয়া অ্যাকাডেমিক ভবনের পাশে তৈরি হচ্ছে আরও একটি নতুন ব্লক। ওই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বর্তমানে যেসব আউটডোর বিভাগ রয়েছে, সেগুলি নতুন ওই ব্লকে চলে আসবে। ফলে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের দুটি তলা ফাঁকা হয়ে যাবে। সেখানেই সদর হাসপাতাল থেকে চক্ষু এবং ইএনটি বিভাগ নিয়ে আসা হবে। 

    যদিও মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ শহরবাসীর একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, এভাবে একের পর এক বিভাগ চলে গেলে গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে জলপাইগুড়ি জেলার হাসপাতাল, যা সদর হাসপাতাল নামেই পরিচিত। বাসিন্দাদের বক্তব্য, জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ শহরের বাইরে, পঞ্চায়েত এলাকায়। শহরবাসীর হাতের কাছে সদর হাসপাতাল। সেখান থেকে কেন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ? বরং সদর হাসপাতালটিকে ভালোভাবে চালানোর ব্যবস্থা করা উচিত। সদর হাসপাতালকে গুরুত্বহীন করে দেওয়ার চেষ্টা হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাসিন্দাদের একাংশ। 

    রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, সদর হাসপাতালের ফেয়ারপ্রাইস শপ কয়েকমাস ধরে বন্ধ। এখন শুধুমাত্র সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ফেয়ারপ্রাইস শপ চলছে। কিন্তু সদর হাসপাতাল থেকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের দূরত্ব দুই কিমির বেশি। ফলে একজন রোগী যদি সদর হাসপাতালে আউটডোর ডাক্তার দেখান, তাঁকে ফেয়ার প্রাইস শপ থেকে ওষুধ কিনতে হলে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যাওয়া আসা বাবদ টোটো ভাড়া গুনতে হবে মাথাপিছু ৩০ টাকা। সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের অভিযোগ, কেউ পেটের যন্ত্রণা নিয়ে এলে তাঁকে তিনমাস পর আল্ট্রাসোনোগ্রাফির ডেট দেওয়া হয়। মাঝেমধ্যে অকেজো হয়ে পড়ছে এক্স-রে পরিষেবা। কিছুদিন আগে বিকল হয়ে পড়ে ডায়ালিসিস মেশিন। সদর হাসপাতালে কোনও পরিষেবা বিকল হয়ে পড়লে কিংবা বন্ধ হলে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ সাফাই দেয়, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে সব পরিষেবা চালু আছে। এর থেকেই বোঝা যায়, সদর হাসপাতাল নিয়ে মোটেই ভাবিত নয় মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। 

    মেডিক্যালের সুপার অবশ্য বলছেন, সদর হাসপাতালকে গুরুত্ব কম দেওয়া হচ্ছে, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। এখানে মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব রয়েছে। তাছাড়া ওই হাসপাতালে জরুরি সব পরিষেবা পাওয়া যায়। যেহেতু একটা মেডিক্যাল কলেজে একটাই ফেয়ারপ্রাইস শপ থাকবে, তাই সেটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রয়েছে। রেডিওলজিস্ট কম থাকায় আল্ট্রাসোনোগ্রাফির ডেট পেতে সময় লাগছে। স্বাস্থ্যভবন বিষয়টি জানে। সদর হাসপাতালে নতুন ডায়ালিসিস মেশিনের ব্যবস্থা হচ্ছে। সুপারের দাবি, সদর হাসপাতালের যা পরিকাঠামো তাতে মেডিক্যাল কলেজ হিসেবে সেখানে চক্ষু এবং ইএনটির মতো বিভাগ চালানো সম্ভব নয়। বিশেষ করে ওটির অবস্থা ঠিক নেই। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)