হুল্লোড়, পিকনিকে জমল বড়দিন, বছর শেষের ছুটির আমেজে মাতোয়ারা আট থেকে আশি
বর্তমান | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা: বুধবার ছিল বড়দিন। ছুটির আমেজ। গত ক’দিন আপেক্ষা আবহাওয়াও ছিল মনোরম। তাই সকাল সকাল নিজেদের গাড়ি নিয়ে অনেকেই ছোটেন পিকনিক করতে কাছাকাছি স্পটে। কেউ যান বাসে কিংবা ভাড়া করা ছোট গাড়িতে। বক্স বাজিয়ে দিনভর চলে হই-হুল্লোড়। কেউ কেউ আবার ছুটির দিনটি উপভোগ করতে দুপুরে শপিংমল, সন্ধ্যায় চার্চে চলে যান, রাতে বাড়ির ছাদে কিংবা পাড়ার মাঠে বন্ধুদের নিয়ে করেন পিকনিক। ভিড় ছিল দার্জিলিং চিড়িয়াখানায়, শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে। কোথাও যাতে অশান্তি না হয় তারজন্য রাস্তায় এবং সংশ্লিষ্ট পিকনিক স্পটগুলিতে ছিল পুলিসের নজরদারি।
বড়দিনের ছুটিতে জমজমাট ভিড় ছিল বাগডোগরার টিপুখোলা ইকো ট্যুরিজম স্পটে। কার্শিয়াং ডিভিশনের বাগডোগরা বনাঞ্চলের ভিতর এই স্পটে সকাল থেকেই শিলিগুড়ি ছাড়াও রাজগঞ্জ, মালবাজার, ইসলামপুর থেকে লোকজন এসে পিকনিক করে যান। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়ে। টিপু নদী থেকে জল সংগ্রহ করে রান্না করেন অনেকেই। পিকনিক না করলেও টিপুখোলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন কেউ কেউ। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির দোকান থেকে ফাস্টফুড ভালো বিক্রি হওয়ায় ওই মহিলারাও খুশি। গোটা পিকনিক মরশুমে ভালো বিক্রির আশায় তাঁরা।
বাগডোগরার রেঞ্জার সোনম ভুটিয়া বলেন, পিকনিক স্পটে ঢোকার মুখেই ব্যাগ তল্লাশি করা হয়েছে। প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ, খালি জলের বোতল বাজেয়াপ্ত করেছি। বর্তমানে ৪০টি হাতি রয়েছে এই সংরক্ষিত বনাঞ্চলে। তাই পিকনিকে আসা লোকজনের সুরক্ষার জন্য জঙ্গলের গোটা রাস্তায় বনকর্মীরা থাকছেন। পিকনিক স্পট ছাড়া জঙ্গলের ভিতর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
দুধিয়ায় বালাসন নদীঘাটেও ছিল উপচে পড়া ভিড়। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি থেকে লোকজন পিকনিক করতে আসেন। প্রাকৃতিক শোভায় ভরপুর দুধিয়ায় মুঠোফোনে সেলফি তোলেন অনেকে। এদিকে, স্থানীয়রা অনেকেই মোমো, চাউমিনের স্টল খুলে বিক্রি করেন। ঘোড়ার পিঠে চড়ে এলাকা ঘুরে দেখার ব্যবস্থাও ছিল দুধিয়ায়। শীতলকুচি থেকে এসেছিলেন কল্পনা দাস। বলেন, আমরা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা পরিবার নিয়ে এই প্রথম এখানে পিকনিক করতে এসেছি। পিকনিক পার্টির নিরাপত্তায় ছিল পানিঘাটা ও গাড়িধুরা ফাঁড়ির পুলিস।
জলপাইগুড়ি জেলার তিস্তার চরে, ধূপগুড়ির জলঢাকা নদীর ধারে, বোদাগঞ্জের গৌরীকোণে এসেছিল প্রচুর পিকনিক পার্টি। দিনভর বক্স বাজিয়ে পিকনিক চলে। ডুয়ার্সের মাল, লিস, ঘিস সহ কমবেশি প্রতিটি নদীর চরে পিকনিকের দল লক্ষ্য করা যায়। অনেকেই যান চার্চে। অলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন স্পটেও ছিল ভিড়। রসিকবিলে ভিজিটদের ভিড় বিগত বছরগুলিকে ছাপিয়ে যায়। রসিকবিল সংলগ্ন মাঠে বসে পিকনিকের আসর। তেকোনিয়া পার্কেও পিকনিক করতে আসেন অনেকে। তোর্সার চরে বিক্ষিপ্তভাবে কিছু জায়গায় পিকনিকের আসর বসে। তবে বনদপ্তরের অধীনে থাকা জঙ্গলে পিকনিকের আসর বসতে দেওয়া হয়নি।
(শিলিগুড়ির কাছে তরীবাড়িতে পিকনিক। - নিজস্ব চিত্র।)