নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: লোকসভা নির্বাচনে ও সিতাই বিধানসভা উপনির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের পর থেকে কোচবিহার জেলায় বিজেপি শিবির কার্যত ঝিমিয়ে পড়েছে। কোথাও তেমন কোনও কর্মসূচি যেমন দেখা যাচ্ছে না তেমনি দলের একাংশ নেতৃত্ব ঢিলেঢালা মনোভাব নিয়ে চলছেন। মুখে তাঁরা সদস্য সংগ্রহ অভিযান কর্মসূচির কথা বলছেন। কিন্তু সভা, সমিতি, মিছিল সহ অন্যান্য কোনও কর্মসূচিই প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। কোচবিহারে জেলা কার্যালয় অধিকাংশ সময় ফাঁকাই থাকে। এসব নিয়ে দলের একাংশ নেতৃত্ব বর্তমানে পদাধিকারীদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ।
সব মিলিয়ে যে কোচবিহার জেলায় বিজেপি এক সময় সাংগঠনিকভাবে যথেষ্ট শক্তি অর্জন করেছিল, সেই দলেরই এখন করুণ পরিস্থিতি। চলতে থাকা সদস্য সংগ্রহ অভিযানে বিজেপির হিমশিম অবস্থাই তার প্রমাণ। ২১ ডিসেম্বর জেলায় সদস্য সংগ্রহ অভিযান শেষ হবে। বুধবার পর্যন্ত কোচবিহার জেলার বিজেপির সদস্য সংগ্রহ হয়েছে ৮৫ হাজার। বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবারের মধ্যে বিজেপি এক লক্ষের ঘরে পৌঁছতে চাইছে। দলের দাবি, গতবার সদস্য সংগ্রহ অভিযানে সদস্য সংখ্যা ছিল ৮৭ হাজার। আর মিসড কলের মাধ্যমে সদস্য হয়েছিল ২ লক্ষ ৫৭ হাজার। যার ধারে কাছেও এবার তাঁরা পৌঁছতে পারছে না।
বিজেপির দাবি, এবার রীতিমতো অন লাইনে ফর্ম পূরণ করে তারপরেই সদস্য হওয়া যাচ্ছে। ফলে আগের বারের সংখ্যা ছোঁয়া কোনওভাবেই সম্ভব নয়। এদিকে, সদস্য সংগ্রহ অভিযান শেষ হলেই জানুয়ারির মধ্যে বিজেপি বুথ স্তর থেকে শুরু করে সমস্ত স্তরেই কমিটি গঠন করবে। ফলে জেলা সভাপতি পরিবর্তন নিয়েও দলের অন্দরে চর্চা চলছে। যদিও এবিষয় নিয়ে কোনও নেতা সেভাবে মুখ খুলতে চাননি।
বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলছে। ৮৫ হাজার সদস্য সংগ্রহ হয়েছে। এখন এটাই কর্মসূচি। মাঠে কৃষিকাজ চলছে। ফলে সকলে পার্টি অফিসে আসবেন কেন? দলীয় কর্মসূচিতে সকলেই কাজ করছেন। জানুয়ারিতে বিভিন্ন স্তরের কমিটি গঠন করা হবে।
জেলায় বিজেপির ছ’জন বিধায়ক রয়েছেন। রাজ্যসভার সাংসদ বিজেপির। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিজেপিকে সেভাবে জেলার রাজনৈতিক ময়দানে দেখা যাচ্ছে না। শহরের উপরে বিজেপির তেমন কোনও কর্মসূচি বেশকিছু দিন ধরেই নজরে আসছে না। দলের একাংশ নেতা অবশ্য আড়ালে বলছেন, জেলা নেতৃত্বের একটা বড় অংশের উদাসীনতার কারণেই দলের এই অবস্থা হচ্ছে। যার ফল আগামী দিনে দলকেই ভুগতে হবে।