• দশকের উষ্ণতম বড়দিন, কোট খুলে ঘাম মুছছেন সান্টা
    এই সময় | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: বড়দিন সংক্রান্ত কুইজে় একটা প্রশ্ন বেশ জনপ্রিয়। জানতে চাওয়া হয়, বেশির ভাগ জায়গাই যখন বড়দিনে হাড় কাঁপানো শীত উপভোগ করে, তখন কোন জায়গার লোকজন ফুল ব্লাস্টে এসি চালিয়ে বড়দিনের উৎসবে মাতে? এই প্রশ্নের স্বাভাবিক উত্তর, দক্ষিণ গোলার্ধের লোকজন।

    উত্তর গোলার্ধে - বিশেষ করে ইউরোপ আর আমেরিকায় যখন কনকনে ঠান্ডা, সেই সময়েই অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা বা দক্ষিণ আমেরিকা গরমে জেরবার। ২০২৪-এ এসে প্রায় একই হাল কলকাতারও। এ বছর বড়দিনে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ১৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বড়দিনের ভোরে এত তাপমাত্রা গত দশ বছরে দেখেনি শহর।

    দিন কয়েক আগেই ‘এই সময় সংবাদপত্রে’ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, ২০২৪ সম্ভবত মানব সভ্যতার ইতিহাসে উষ্ণতম বছর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে। বছরের শেষ সপ্তাহে এসে সেই আশঙ্কা ক্রমশ সত্যি হওয়ার দিকে আরও একধাপ এগলো। বছরের বেশির ভাগ সময়টাই দেশের পূর্ব উপকূলকে চাপ রেখেছিল বঙ্গোপসাগর। ২০২৪-এর একেবারে শেষ পর্যায়ে এসেও মতিগতি বদলায়নি সমুদ্রের। আবহবিদরা জানিয়েছেন, গত দশ দিন ধরে সমুদ্রের উপর একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে।

    ওই নিম্নচাপ জায়গা পরিবর্তন না করার জন্যই একদিকে আন্দামান ও নিকোবরের উপর তুমুল বৃষ্টি হয়েছে, অন্য দিকে দক্ষিণবঙ্গ-সহ দেশের অনেকটা জায়গাতেও বাতাসে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢুকে চলেছে। সমুদ্র বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এখন বঙ্গোপসাগরের উপরিতলের গড় তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়েও বেশি।

    তাই সহজেই জলীয় বাষ্পের জোগান পেয়ে চলেছে ওই নিম্নচাপ। তার প্রভাবেই বড়দিনের বাজারেও শীতের লেশমাত্র নেই শহরে। শহর থেকে শীত লোপ পেয়ে যাওয়ার আরও একটা কারণ অবশ্য দেশের উত্তর পশ্চিম প্রান্তে তৈরি একটি ঝঞ্ঝা। তার প্রভাবেই ঠাণ্ডা হাওয়ায় প্রবেশে সাময়িক ছেদ পড়েছে।

    আবহবিদরা জানাচ্ছেন, বুধবার ভোর রাতে শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত দশ বছরে ২৫ ডিসেম্বরে এমন উষ্ণ রাত দেখেনি শহর। এর আগে গত এক দশকে উষ্ণতম বড়দিন শহর পেয়েছে ২০১৫ সালে।

    সে দিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দশ বছরের পুরোনো ওই রেকর্ডই ভেঙে দিল ২০২৪-এর বড়দিন। তবে এমন পরিস্থিতির পরেও আবহবিদরা আশা হারাতে নারাজ। তাঁরা জানাচ্ছেন, নতুন বছরের শুরুর দিকে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত তেমন হয় কি না সেটা জানার জন্য আপাতত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।

  • Link to this news (এই সময়)