• বিসিএস আধিকারিকের স্ত্রীকে বাড়ি থেকে তাড়ানোর নালিশ
    এই সময় | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, দুর্গাপুর: শীতের রাতে বউমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক ডব্লিউবিসিএস অফিসারের মায়ের বিরুদ্ধে। সোমবার সারারাত ওই বধূকে বাড়ির বাইরে কাটাতে হয়। অভিযোগ, তাঁর স্বামী ওই ডব্লিউবিসিএস অফিসারও স্ত্রীকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে উদ্যোগ নেননি। পরে বধূর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এসে দরজার তালা ভেঙে বধূকে বাড়িতে ঢুকিয়ে দিয়ে যায়। সেই সময়ে বাড়িতে ছিলেন না ওই বধূর শাশুড়ি ও স্বামী।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডব্লিউসিএস অফিসার নীলাদ্রি মুখোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের খাদ্য দপ্তরে চাকরি করেন। বর্তমানে তিনি মুর্শিদাবাদ জেলায় কর্মরত। নীলাদ্রির বাবা প্রয়াত পুলিশ আধিকারিক দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন দুর্গাপুরে। এক বছর আগে সিউড়ির বাসিন্দা সুতপার সঙ্গে বিয়ে হয় নীলাদ্রির। সেই সময়ে মালদা জেলায় কর্মরত ছিলেন তিনি। বিয়ের পরে বেশ কিছু দিন স্বামীর সঙ্গে মালদায় ছিলেন সুতপা। বাকি সময়ে তিনি থাকতেন বাপের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি অম্বুজানগরীতে।

    অভিযোগ, পারিবারিক অশান্তির জেরে সোমবার রাতে সুতপাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন শাশুড়ি গীতা মুখোপাধ্যায়। পুরো রাত বাইরে কাটাতে হয় সুতপাকে। মঙ্গলবার সকালেও তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তিনি বেশ কয়েকবার ফোন করলেও শাশুড়ি ফোন রিসিভ করেননি বলে অভিযোগ। প্রতিবেশীরাও ঘটনাটি শুনে গীতাকে বোঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

    এর পরে বাধ্য হয়ে মুর্শিদাবাদে স্বামী নিলাদ্রিকে ফোন করেন সুতপা। বিকেলে দুর্গাপুরে ফিরে আসেন নিলাদ্রি বলে দাবি। অভিযোগ, তিনিও সুতপাকে ঘরে ঢুকতে দেননি। এর পরে দুর্গাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন সুতপা। সেখানে পুলিশের কাছে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী ও শাশুড়ির উগ্র মেজাজ। তাঁরা যেটা বলবেন সেটাই ঠিক। প্রতিবাদ বা সমালোচনা করা যাবে না। কখন কোথায় যাচ্ছেন জিজ্ঞাসা করা যাবে না। সামান্য রান্না করা নিয়ে শাশুড়ির সঙ্গে বচসা হয়। তার জন্য আমাকে বাড়ি থেকে বার করে ঘরের দরজা ও গেটে তালা লাগিয়ে দেন। বাড়িতে ঢুকতে দেননি। বাড়িতে আমার অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র আছে। শ্বশুরবাড়ি চায়, আমি যেন বাপের বাড়িতে গিয়ে থাকি।’

    মহিলার অভিযোগ শুনে পুলিশ এক জন চাবিওয়ালা ডেকে এনে তালা খোলার চেষ্টা করে। পরে তালা ভেঙে সুতপাকে বাড়িতে ঢোকানো হয়। ঘটনাটি জানাজানি হতেই নিন্দায় সরব হন প্রতিবেশীরা। এর মধ্যে সোশাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পড়ে ঘটনাটি।

    সিটি সেন্টার এলাকার বাসিন্দা পরিমল অগস্থি বলেন, ‘নীলাদ্রি মুখোপাধ্যায়ের বাবাকে আমি জানতাম। অত্যন্ত ভদ্র মানুষ ছিলেন। তাঁর পরিবারে এই ধরনের গন্ডগোল কাম্য নয়।’ বিষয়টি দুর্গাপুর থানা থেকে জানানো হয় মহকুমাশাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, ‘দুর্গাপুর থানা থেকে বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছিল। মহিলাকে বাড়িতে ঢোকানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে যদি আর কোনও সমস্যা হয় তা হলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’ তবে কোনও মন্তব্য করেননি ওই ডব্লিউবিসিএস অফিসার। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

  • Link to this news (এই সময়)