বিশ্বরূপ বিশ্বাস, ইসলামপুর
কোটি টাকা খরচ করে শহরের মূল সড়ক সম্প্রসারণ হলেও অবৈধ পার্কিংয়ের জেরে প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর শহরের বাসিন্দাদের। পার্কিং না থাকার কারণে সাধারণ মানুষের জন্য তৈরি করা ফুটপাথেই রাখা হচ্ছে যানবাহন। অবৈধ পার্কিং রুখতে পুর প্রশাসন বা পুলিশ, কারও কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। শহরের মূল সড়কে যানজট কমাতে বাইপাস রাস্তা ও ফুটপাথ নির্মাণের দাবি উঠেছিল আগেই। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন স্মারকলিপিও দেয় পূর্ত দপ্তরে।
২০২১ সালে বাইপাস হলেও শহরের যানজট না–কমলে এ বছর পুজোর আগে অলীগঞ্জ থেকে শ্রীকৃষ্ণপুর পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণ ও ও ফুটপাথ নির্মাণে হাত দেয় পূর্ত দপ্তর। প্রায় ২৪ কোটি টাকা খরচ করে সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলেও কোনও এক অজানা কারণে ফুটপাথের কাজ এখনও বাকি রয়ে গিয়েছে।
স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী পায়েল পাইন বলেন, ‘অবৈধ পার্কিংয়ের জন্য সারাদিন রাস্তায় জ্যাম লেগে থাকে। অনেক সময়ে নিজের চোখেই ছোট বড় দুর্ঘটনা দেখতে হয়।’ তাঁর সংযোজন, ‘পুরসভা থেকে যদি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হতো তাহলে আমরা স্বস্তি পেতাম।’
স্থানীয় বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক মৌনব্রত সরকার বলেন, ‘২৪ কোটি টাকার এত বড় প্রজেক্ট করার আগে প্রশাসনের আরও ভালো ভাবে পরিকল্পনা করা উচিত ছিল। ফুটপাথের পাশ দিয়ে রেলিং করলে হয়তো সাধারণ মানুষকে এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো না।’ পার্কিংয়ের বিষয়টি পুরসভার দায়িত্ব বলে জানিয়েছেন পূর্ত দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ভবতোষ দাস।
তিনি বলেন, ‘পার্কিংয়ের ব্যবস্থা পুরসভার করার কথা। এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানো হবে।’ যানজটের জন্য পুরসভার ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছে বিরোধীরা। উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির সহসভাপতি সুরজিৎ সেন বলেন, ‘ইসলামপুর শহরে পুলিশ বা পুর–প্রশাসন বলে কিছু নেই। শহরে সমস্তটাই অনিয়মে চলছে। ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করে সড়ক সম্প্রসারণ হওয়ার পরেও সাধারণ মানুষের কোনও লাভ হয়নি। বরং টোটো চালক ও রাস্তার দু’পাশে থাকা কিছু ব্যবসায়ীদের লাভ হয়েছে।’
সিপিএমের ইসলামপুর এরিয়া কমিটির সম্পাদক আব্দুল করিম বলেন, ‘কাজ শুরুর আগে আমরা পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে প্ল্যান সম্পর্ক আলোচনা করেছিলাম। তখন তাঁরা যে প্ল্যান আমাদের দেখিয়েছিল, সেই মতো কাজ হয়নি।’
ইসলামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান তথা উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘অবৈধ পার্কিংয়ের একটা সমস্যা রয়েছে এটা ঠিক। সেই কারণে যানজট হচ্ছে। এখনও ফুটপাথের কাজ কিছুটা বাকি রয়েছে। কাজ শেষ হলে পুর প্রশাসনের উদ্যোগে অবৈধ পার্কিংয়ের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’