• ‘ওঝার কাছে যাব না, তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে চলো’, উপযুক্ত শিক্ষাই প্রাণ বাঁচাল সাপের ছোবল খাওয়া ছাত্রীর
    এই সময় | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • পায়ে ছোবল বসিয়েছিল বিষাক্ত সাপ। নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ওঝার কাছে নিয়ে গিয়েছিল পরিবার। কিন্তু এ মেয়ে যে শিক্ষিত, বিজ্ঞানমনস্ক। ফলে বুজরুকিতে তার বিশ্বাসই নেই। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা কষছে বুঝেও বাবা-মাকে দৃঢ় গলায় জানায়, হাসপাতালেই নিয়ে যেতে হবে তাকে। মেয়ের জেদের কাছে হার মেনে তাকে অবশেষে হাসপাতালেই নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। চিকিৎসকদের চেষ্টায় প্রাণ বাঁচে তার।

    ঘটনা দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের। জানা গিয়েছে, ক্যানিং থানার অন্তর্গত দিঘিরপাড় পঞ্চায়েতের কালীমন্দির সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা কার্তিক এবং উর্মিলা নস্করের মেয়ে সোনালি নস্করকে বুধবার রাতে সাপে কামড়ায়। পরিবারের লোকজন তাকে তড়িঘড়ি সাতমুখী বাজার সংলগ্ন খোলাখালি গ্রামে এক ওঝার কাছে নিয়ে যান।

    কিন্তু নবম শ্রেণির এই ছাত্রী প্রথম থেকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য জেদ ধরেছিল। কিন্তু তার কথা না শুনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ওঝার কাছে। সেখানে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ ব্লেড দিয়ে কাটা হয়। চলে ঝাড়ফুঁকও। এমনকী, তেলপোড়া, জলপোড়াও দেওয়া হয়। কিন্তু সোনালির শারীরিক অবস্থার ক্রমাগত অবনতি হতে শুরু করে। এরপরেই টনক নড়ে পরিবারের। ছাত্রীর কথা শুনে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে তড়িঘড়ি ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান।

    বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন ওই ছাত্রী। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, তার শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। সোনালির দিদিমা সারথী সর্দার জানান, নাতনি প্রথম থেকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য জেদ ধরেছিল। কিন্তু প্রথমে ওর কথা শোনা হয়নি। পরে সকলে মিলে ওকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক সমরেন্দ্রনাথ রায় জানিয়েছেন, নিজের বুদ্ধির জোরে প্রাণ বেঁচেছেন ওই ছাত্রী। তার সাহসকে কুর্নিশ জানিয়েছেন চিকিৎসক। পাশাপাশি ওঝাদের বাড়বাড়ন্ত ঠেকানোর জন্য প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপ করার আবেদনও করেছেন তিনি।

  • Link to this news (এই সময়)