এই সময়, শিলিগুড়ি: নিকাশির জল দিয়ে এ বার গাছের পরিচর্যা করবে শিলিগুড়ি পুরসভা। মহানন্দার চরে গোলাপ বাগান, শহরের রাস্তায় থাকা বড়–ছোট গাছের পরিচর্যা, এমনকী রাস্তা ধোওয়ার ক্ষেত্রে এই জলই ব্যবহার করা হবে। সোয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্টের (এসটিপি) মাধ্যমে নিকাশি জল পরিশোধন করে তবেই ব্যবহার করা হবে।
শিলিগুড়ি পুরবোর্ডে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানের আওতায় থাকা তিনটি এসটিপি চালু করার উদ্যোগ নেন মেয়র গৌতম দেব। বর্তমানে শহরে দু’টি এসটিপির কাজ শেষের পথে। মাটিগাড়ায় জমি চিহ্নিত করে একটি নতুন প্লান্টের কাজ শীঘ্রই শুরু করার ইঙ্গিত দিয়েছেন মেয়র।
জানা গিয়েছে, অর্ধসমাপ্ত এসটিপি দু’টোরও কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে একটি এসটিপি চালু করা হবে। ওই এসটিপি চালু হলে সেখানে শহরের নিকাশির জল পরিশোধন করে শহরের গাছের পরিচর্যা, ফুল গাছের পরিচর্যা এবং রাস্তা ধোওয়ার কাজ করা হবে। তিনটি এসটিপির বর্তমান অবস্থা জানতে কয়েক দিন আগে শিলিগুড়ি পুরনিগমে আসেন রাজ্যে সরকারের বিশেষ সচিব নন্দিনী ঘোষ এবং কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির কর্তারা। শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা।
মেয়র বলেন, ‘এসটিপি গুলির কাজ দ্রুত শেষ করা হবে। আগে আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে এসটিপি ২ চালু করা হবে। সাত থেকে আট মাসের মাথায় এসটিপি–৩ চালু করে দেবো আমরা। এসটিপি–১ এর জন্য জায়গা দেখা হয়ে গিয়েছে। ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।’
মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছিল বাম আমলে। কিন্তু শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটিতে ২০০ কোটি টাকা দুর্নীতির জেরে ওই অ্যাকশন প্ল্যানের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এতদিন অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়েছিল সমস্ত কাজ। শিলিগুড়ি পুরনিগমে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে এই কাজ চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
সেইমতো এসটিপিগুলির কাজ আগে শুরু হয়৷ কাজ বন্ধ হওয়ার আগে এসটিপি টু পুরোপুরি ভাবে তৈরি ছিল। শুধুমাত্র পাইপলাইন বসানোর কাজ কিছুটা বাকি ছিল। তৃণমূল বোর্ড ক্ষমতায় এসেই আগে এইচটিপি–২ এর কাজ শুরু করে। এইচটিপি–৩–এর কাজ আগেই অনেকটা এগিয়ে ছিল। সেটাও শুরু করে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, এসটিপি ওয়ানের জন্য মাটিগাড়ায় বালাসনের ধারে একটি জমি দেখা হয়েছে। এই ট্রিটমেন্ট প্লান্ট চালু হলে সেখানে শহরের নিকাশির জল ট্রিটমেন্ট করা হবে। এরপর ওই জল পাইপ লাইনের মাধ্যমে শহরের থাকা গাছের এবং মহানন্দার ধারে ফুলের বাগান তৈরি করার জন্য ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি শহরের রাস্তাঘাট পরিষ্কার করার জন্যও ওই জল ব্যবহার করবে পুরসভা। শহরের প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘এটা তো প্রজেক্টের মধ্যেই ছিল। নতুন তো কোনও ব্যাপার নয়। তবে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন করে টাকা বরাদ্দ করেছে কিনা সেই বিষয়ে সন্দেহ আছে।’