এই সময়, আরামবাগ: আবাস যোজনার টাকা উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে তোলাবাজি শুরু করেছেন এলাকার এক দাপুটে তৃণমূল নেতা ও তার লোকজন। এ বিষয়ে কেউ কিছু বললে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। আরামবাগের আরান্ডি–১ গ্রাম পঞ্চায়েতের আরাকুল গ্রামে এই অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়ায় বুধবার। ঘটনার প্রতিবাদ করায় বুধবার ওই এলাকার আরও এক তৃণমূল নেতা শেখ আব্বাসউদ্দিনকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তিনি আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা গিয়েছে, আরান্ডি–১ গ্রাম পঞ্চায়েতের আরাকুল গ্রামে আবাস যোজনায় এ বার প্রায় ১৬ জন উপভোক্তা বাড়ি পেয়েছেন। অভিযোগ, এই এলাকার প্রাক্তন প্রধান সোহরাব হোসেন মানুষকে ভয় দেখিয়ে টাকা তুলছেন। তাঁর ভাইপো আরাফাত দলবল নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা তুলে আনছেন। ইতিমধ্যে চাপে পড়ে অনেকে টাকা দিয়েও দিয়েছেন।
এই অবস্থায় গ্রামের মানুষকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝানোর কাজ শুরু করেছিলেন ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী শেখ আব্বাসউদ্দিন। বুধবার সকালে তিনি এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, এ দিন সন্ধ্যায় সোহরাব ও আরাফতের লোকজন বেধড়ক মারধর করে আব্বাসউদ্দিনকে। আক্রান্ত নেতা বলেন, ‘পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে কোনও দিন আমি খুন হয়ে যেতে পারি। কারণ, এই কাজে আমি বহুবার বাধা দিয়েছি। সব জেনেও চুপ করে রয়েছে পুলিশ।’ তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি মুন্সি ইকবাল বিষয়টি দেখছেন।
এলাকার বাসিন্দা সঞ্চিতা অধিকারী, দিলীপ অধিকারী, মমতা অধিকারী বাড়ি পেয়েছেন। অভিযোগ, আরাফত এসে তাঁদের কাছ থেকেও টাকা নিয়ে গিয়েছেন। সঞ্চিতা বলেন, ‘তৃণমূল আমরাও করি। আমাদেরও টাকা দিতে বাধ্য করেছে সোহরাব ও আরাফত। টাকা না দিলে এখান থেকে বেরনো যাবে না। ভয়ে পুলিশে অভিযোগ করতে পারছি না।’
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, সব জেনেও চুপচাপ প্রশাসন। আরামবাগের এসডিপিও সুপ্রভাত চক্রবর্তী বলেন, ‘কেউ অভিযোগ করেনি। তবু আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’ অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ আরাফত বলেন, ‘এ রকম ঘটনা ঘটলে প্রশাসন তার ব্যবস্থা নিক। আমরা কোনও মারধর করিনি।’