প্রসেনজিৎ মালাকার: বউয়ের জন্য লাভ সাইন। তা, যে কোনও বরই সেটা তাঁর বউকে দিতে পারেন। কিন্তু খোদ পুরসভার বিজ্ঞাপন থেকে যদি কেউ লাভসাইন খুলে নিয়ে গিয়ে নিজের বউকে দিতে চান? আশ্চর্য হচ্ছেন? ঘটনা কিন্তু তেমনই।
ঘটেছে বীরভূমে। সিউড়ি পুরসভার 'আমার ভালোবাসা সিউড়ি' - লেখার মাঝের লাভ-চিহ্নটি চুরি করেছিলেন এক যুবক। কিন্তু ঘটনাচক্রে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার আগেই ভেঙে গিয়েছিল প্লাস্টিকের ওই 'প্রেম'। সরকারি জিনিস হস্তগত করার অপরাধে ধরাও পড়েন ওই যুবক। ধরা পড়ার পরে সমস্ত ঘটনাই সিউড়ি থানার পুলিসকে জানান ওই যুবক। না, পুলিস শাস্তি-টাস্তি কিছু দেয়নি। বরং আশ্চর্য মানবিক হয়ে উঠেছিল তারা ওই যুবকের সমস্ত ঘটনা শুনে।
পুলিস আর সিউড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান স্ত্রীকে দেওয়ার জন্য ওই যুবককে কিনে দিলেন এইগুচ্ছ গোলাপ! থানার বাইরেই স্ত্রীকে গোলাপ দেন তিনি। পাশাপাশি পায়ে হাত দিয়ে স্ত্রীকে প্রণাম করে তিনি প্রতিজ্ঞাও করেন যে, আর কোনও দিন কোনও কারনেই চুরি করবেন না তিনি। এই মর্মে কাগজে সই করিয়ে যুবককে ছেড়ে দেয় পুলিস।
ঘটনার সূত্রপাত ২৪ ডিসেম্বরের রাত। সিউড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান সিউড়ি থানায় অভিযোগ জানান, সিউড়ি শহরে সার্কিট হাউস লাগোয়া-- যাতে লেখা, আমার ভালোবাসা সিউড়ি-- এলইডি বোর্ড থেকে লাভ চিহ্নটি চুরি গিয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিস বীরভূমের মহম্মদবাজার থেকে এক যুবককে আটক করে। পুলিসের জেরায় ওই যুবক স্বীকার করেন ২৫ ডিসেম্বরের রাতে সিউড়িতে থাকা তাঁর স্ত্রীকে উপহার দেওয়া জন্য ওই বড়ো লাল রংয়ের লাভ চিহ্নটি চুরি করেছিলেন তিনি। কিন্তু স্ত্রীর কাছে নিয়ে যাওয়ার আগেই প্লাস্টিকের ওই লাভচিহ্নটি ভেঙে যায়।
সব শুনে পুলিস আর সিউড়ি পুরসভার চেয়ারম্যানই এক গুচ্ছ গোলাপ কিনে দেন ওই যুবককে। থানা থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই স্ত্রীর হাতে ওই গোলাপ তুলে দেন লাভসাইন-চোর স্বামী।