• সনতের স্মার্ট বাগানে কীটনাশক ছাড়াই হচ্ছে ফলন, কেমন খেতে সেই সব সব্জি?...
    আজকাল | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইঁট-কাঠ, পাথরে ঘেরা শহরের বাগানে ফলছে তাজা সব্জি। সার এবং কীটনাশক ছাড়াই। জল দেয় যন্ত্র। যেন বাঞ্ছারামের আধুনিক সংস্করণ। কীভাবে? আরে সেটাই তো গল্প।

    কথা হচ্ছে সনতের স্মার্ট সব্জি বাগানের। বর্ধমানের সনৎ সিংহ। সিংহমশাই বাগানবিলাসী। চাকরি করেন বিধানচন্দ্র কৃষি বিদ্যালয়ের অধীনে বর্ধমান কৃষি খামারে কৃষি কলেজে। সেখানকার অফিস সুপারিন্টেন্ডেন্ট তিনি। তাঁর মন পড়ে থাকে বাগানে। বছরভর সব্জি আর ফুলের চাষ করেন। সনতের বাড়ি ঝাপানতলায়। তাঁর বাড়ির ছাদে বাগান রয়েছে ইতিমধ্যেই। এবারে তিনি একটা আস্ত স্মার্ট বাগান তৈরিতে মন দিয়েছেন। ছাদ বাগানের সঙ্গে আরও একটি বাগান করেছেন বর্ধমান শহরের সোনার কালীবাড়ির পাশের গলিতে। সেখানেই একচিলতে জমি নিয়েই সনতের এই স্মার্ট বাগান। প্রতি বছরই অর্গানিক, বিষমুক্ত চাষ করেন সনৎ। বাগানটিতে ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে গাছে জল দেন সনৎ। যে কোনও প্রান্তে বসে থেকে। 

    কী কী ফলিয়েছেন তিনি? শীতের ফসল ফুলকপি থেকে শুরু করে বেগুন, বিন্স, গাজর, লঙ্কা, ধনেপাতা, মটরশুটি, সিম, লাউ এবং কুমড়ো। এছাড়াও আছে পেপে, কলা, আদা, পেয়ারার গাছও। এবছর ছাদে চাষের সাথে সাথে নতুন বাগানে ফলেছে ১২০ বস্তা আদা। বর্ষাকালীন পিয়াজ চাষ ছাদ বাগানে  হয়েছে এই বছরেই। 

    কিন্তু কীভাবে এত সব্জি ফলেছে কোনও রাসায়নিক ছাড়াই? সনৎ জানিয়েছেন, মাটিতে মুরগির মল দেওয়া হয়। গাছের খাবার বলতে সর্ষের খোল, জল আর গোবর সার। এর পাশাপাশি, পিয়াজের খোসা আর ফেলে দেওয়া চা পাতা এই দুটি জিনিস জোগাড় করেন তিনি। চা পাতাগুলোকে ভালো করে জলে ধুয়ে ওখান থেকে চিনি আর দুধের অংশ বার করে দেন। তারপর শুকিয়ে কিছুটা গাছের গোড়ায় দিয়ে দেন আর কিছুটা পিয়াজের খোসার সাথে মিশিয়ে জলে ভিজিয়ে রাখেন। এরপর সময়মতো সেই জল গাছের গোড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন গাছেও স্প্রে করা হয়। আর পোকা মাকড়ের হাত থেকে গাছগুলিকে বাঁচাতে এক পাতা শ্যাম্পু, দাঁতের মাজন জলে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করেন। এর ফলে তাঁর ফসলে পোকামাকড়ের উৎপাত নেই। 

    এই যে এত ফসল, এত সবজি তা দিয়ে কী করেন? জানালেন, নিজের বাড়িতে খান। বাকিটা পড়শি,বন্ধুবাধবদের উপহার দেন। সবাই খুশি হয়। এই শীতে বিষমুক্ত তাজা ফুলকপি পেতে ভালই লাগবে। কী বলেন, যাবেন নাকি?
  • Link to this news (আজকাল)