এজেন্সির ঢিলেমিতে কৃষ্ণনগর শহরে ব্যাহত হচ্ছে অম্রুত জল প্রকল্পের কাজ
বর্তমান | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: এজেন্সির গড়িমসিতে কৃষ্ণনগর শহরে ব্যাহত হচ্ছে অম্রুত ২.০ প্রকল্পের কাজ। বাড়ি বাড়ি জলের সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে ঢিমেতালে। প্রতিদিন যে সংখ্যক বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়ার কথা, তার অর্ধেক কাজও করছে না সংশ্লিষ্ট এজেন্সি। এছাড়াও জল সংযোগের কাজ করতে গিয়ে রাস্তা খারাপ করার অভিযোগও রয়েছে। তাই নিয়ে ক্ষুব্ধ খোদ কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারম্যান রীতা দাস। বারবার বলেও কাজের ব্যাপারে কার্যত উদাসীন এজেন্সি। যার ফলে, চলতি বছরে কৃষ্ণনগর শহরে যে সংখ্যক বাড়িতে জলের কানেকশন দেওয়ার কথা ছিল, তার ধারে কাছেও পৌঁছনো যায়নি। বিপুল পরিমাণ কাজ বাকি থাকায়, এজেন্সির বিরুদ্ধে লেখা চিঠিতে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। এমনকী ইঞ্জিনিয়ারকে এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন।
এব্যাপারে চেয়ারম্যান বলেন, ‘অম্রুত প্রকল্পের কাজ সংশ্লিষ্ট এজেন্সি ভালোমতো করছে না। তাই নিয়ে আমি চিঠি করেছি। কাজ নিয়ে অত্যন্ত গড়িমসি করা হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি জল সংযোগ নিয়ে যে কাজ করার কথা, সেটাও তারা করছে না।’
পুরসভার সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষ্ণনগর শহরের মোট ৪৭ হাজার পরিবার, যারা গঙ্গার জলের সংযোগ পাবে। কিন্তু এর মধ্যে ২৭ হাজার পরিবারে জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরে আরও কুড়ি হাজার বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়ার কথা ছিল। সেই মতো শহরে জোর কদমে কাজও শুরু হয়। তবে বিভিন্ন কাজের গতি কমে যেতে দেখা যায়। তবে বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে জল সংযোগের কাজ কার্যত বন্ধ রয়েছে। বৎসরান্তে দেখা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত মাত্র ৫ হাজার পরিবারেই জলের সংযোগ দেওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ ১৫ হাজার বাড়ির জলের কানেকশন বিগত এক বছরেও শেষ করে উঠতে পারেনি এজেন্সি। পুরসভা সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, জলের সংযোগের কাজের গড়িমসি নিয়ে চলতি বছর অক্টোবর মাসের শেষের দিকে দ্বিজেন্দ্র মঞ্চে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে এজেন্সির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সেই মিটিংয়ে ঠিক হয়, এজেন্সি প্রতিদিন একশো পরিবারকে জলের সংযোগ দেবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট এজেন্সি দিনে ৫০টি পরিবারকেও জলের সংযোগ দিতে পারছে না। পাশাপাশি শহরের ২৫টি ওয়ার্ডকে ছ’টি জোনে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রতিটি জোনে আলাদা করে শ্রমিককে কাজে নামানো হয়নি এজেন্সির তরফ থেকে। তাতে কাজের গতি আরও কমে গিয়েছে। এই সমস্ত কিছুই পুরসভার চেয়ারম্যান তার চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।
পাশাপাশি জল সংযোগের সময় শহরের রাস্তা খারাপ করা নিয়েও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট সংস্থাকেই রাস্তা সংস্কার করে দেওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা করছে না বলে অভিযোগ চেয়ারম্যানের। যদিও এই প্রথমবার নয়, এর আগেও একাধিক চিঠিতে চেয়ারম্যান অম্রুত ২.০ প্রকল্পের কাজের গুণগতমান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জলের কানেকশন পাওয়া ওয়ার্ডগুলোতেও অভিযোগ রয়েছে শহরবাসীর। কারণে সেখানে জল পড়লেও তার গতি অনেকটাই কম। শহরবাসীর অভিযোগ, কল থেকে সুতোর মতো জল পড়ে। যদিও এই বিষয়টি নিয়ে আগেই চিঠি করেছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান।