সংবাদদাতা, বোলপুর: শান্তিনিকেতনের পৌষমেলায় খাবারের দোকানগুলিতে মেয়াদ উত্তীর্ণ সস, কাসুন্দি ও অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ উঠছে। বোলপুর মহকুমা ফুট সেফটি অফিসার সঞ্জুয়ারা খাতুন অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রথম দিন থেকেই খাবারের দোকানগুলোতে নিয়মিত অভিযান চলছে। বেশ কিছু দোকান থেকে এক্সপায়ার হয়ে যাওয়া খাদ্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বাসি খাবারও হোটেল মালিকদের ফেলে দিতে বাধ্য করেছি। খাবারে রং মেশানো হচ্ছে কিনা সে বিষয়টিও নজরে রেখেছি। খাদ্য সুরক্ষায় আপস করা হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দোকান মালিকদের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
এই ধরনের তারিখ উত্তীর্ণ সামগ্রী দিয়ে তৈরি খাবার খেলে পেট খারাপ অনিবার্য, হতে পারে ডায়ারিয়াও। এমনটাই বলছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী এই মেলার বেশ কিছু খাবারের দোকান, হোটেল ও রেস্টুরেন্টে চলছে এই অবৈধ কাজ। এছাড়া খাবারের থালা ধোয়া হচ্ছে নোংরা জলে। হোটেলের পিছন দিকে গেলেই তা দেখা যাবে। মেলায় দর্শনার্থীদের খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে যা প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। যদিও ফুড সেফটি অফিসারের দাবি, নিয়মিত অভিযান চলছে। আগামী দিনও ধরপাকড় জারি থাকবে।
বিশ্বভারতী এ বছর ফের পৌষমেলা আয়োজন করায় পরিচিত সেই ভিড় ফিরে এসেছে। মেলার প্রথম চারদিনে ভিড় সামলাতে পুলিস প্রশাসনকে নাকানিচোবানি খেতে হয়েছে। এবছর স্টলের সংখ্যা বাড়িয়ে এক হাজার ৮০০ করা হয়েছে। যার অধিকাংশই মিষ্টি, রকমারি খাবার ও ফাস্টফুডের দোকান। মেলায় ঘুরতে এসে খিদে পেলে এই দোকানগুলিই ভরসা। বড় বড় হোটেল, রেস্টুরেন্টের স্টলগুলিতে ক্ষুধার্থদের ভিড় উপচে পড়ছে। খিদের চোটে খাবারের গুণগত খতিয়ে দেখার ফুরসত হচ্ছে না গ্রাহকদের। এই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছে বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। খাবারকে মুখরোচক করতে উপাদান হিসেবে অনেকেই টমেটো, লঙ্কার সস, কাসুন্দি, ভিনিগার ব্যবহার করেন। কিন্তু অভিযোগ, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট মালিকদের একাংশ সস্তায় পেয়ে ‘এক্সপায়ার’ হওয়া সামগ্রী ব্যবহার করছেন। এছাড়া অধিক লাভের আশায় যে ভোজ্য তেল, ভোজ্য রং ব্যবহৃত হচ্ছে সেগুলি ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (এফএসএসএআই) স্বীকৃত নয়। পাশাপাশি, বাসি খাবার চালিয়ে দেওয়া তো অসাধু ব্যবসায়ীদের পরিচিত পলিসি। -নিজস্ব চিত্র