সংবাদদাতা, কান্দি: সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান করা হবে। এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি সাঁটা হয়েছে ভরতপুর ১ ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের নোটিস বোর্ডে। যদিও এতেও সমস্যার কথা শোনাচ্ছেন বাসিন্দারা। সমস্যা মেটাতে এসে তাঁদের বারবার অফিস থেকে ফিরে যেতে হচ্ছে বলে দাবি। তবে ওই দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, মানুষের সুবিধার জন্যই এই বিজ্ঞপ্তি।
ভরতপুর ১ বিডিও অফিস চত্বরের মধ্যেই ওই দপ্তরের অফিস। ভরতপুর ১ ব্লক বিএলএলআরও-র সিল ও স্বাক্ষর সম্বলিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে লেখা রয়েছে, বিএলএলআরও সাহেব নিম্নলিখিত দিনে নিম্নলিখিত কাজ করবেন। মঙ্গলবার- সংশোধন। পুরনো রেকর্ডে নাম আছে কিন্তু বর্তমানে নেই। বুধবার- বর্গা, ভাগচাষ, ওয়ারিশ। বৃহস্পতিবার- মিস কেস। শুক্রবার- ছোটখাটো ভুলের সংশোধন। একাধিক খতিয়ান এক খতিয়ানভূক্ত করা। যদিও সোমবারে কী করা হবে তা বিজ্ঞপ্তিতে নেই।
বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক কাজও শুরু হয়েছে। তাতে অনেকের যেমন সুবিধা হয়েছে, তেমনি অনেকে অসুবিধার কথাও জানিয়েছেন। ভরতপুরের বাসিন্দা শুকুরউদ্দিন আলম বলেন, বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক আমার কাজ হবে মঙ্গলবারে। কিন্তু পরপর দু’ সপ্তাহ গিয়ে ফিরে এলাম। প্রথম সপ্তাহে অফিস গিয়েছিলাম বেলা দেড়টা নাগাদ। কিন্তু ততক্ষণে বিএলএআরও সাহেবের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় শেষ হয়ে গিয়েছিল। পরের সপ্তাহে গিয়ে দেখি বিএলএলআরও সাহেব অফিসে নেই। মিটিংয়ে গিয়েছেন। যে কাজ আমার একদিনে হওয়ার কথা। ১৫ দিনেও সেই কাজ সারতে পারলাম না। কোল্লা গ্রামের আনারকলি বিবি বলেন, আমার জমির রেকর্ডে ভুল রয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞপ্তির ব্যাপারে কিছুই জানতাম না। তাই গ্রাম থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে এই অফিসে এসেও আবেদন জমা করতে পারলাম না। আবার পরের সপ্তাহে আসতে হবে।
তবে এই বিজ্ঞপ্তির সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে বলে দাবিও করেছেন অনেকে। স্থানীয় বিনোদিয়া গ্রামের বাসিন্দা সোনারুল ইসলাম বলেন, বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ভালো কাজ হয়েছে। কোনও একটি কাজ নির্দিষ্ট দিনেই হবে। এতে সময় ও হয়রানি কমবে। তবে আবেদনে ভুল হলে আবার এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে এটাও সমস্যার। ওই অফিসের এক দালাল বলেন, বিজ্ঞপ্তিতে কার কী সুবিধা হল জানি না, তবে আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে। একই দিনে পাঁচ ধরনের কাজ করতে সমস্যা হয়। মাথার ঠিক থাকে না। তাই নির্দিষ্ট দিনে একই কাজ করার ফলে ঠান্ডা মাথায় কাজ করা যায়। এতে কাস্টমারকেও সন্তষ্ট রাখা যাচ্ছে।
বিএলএলআরও আনন্দমোহন মাইতি বলেন, মানুষের সুবিধার জন্যই এই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন অফিসে এসে ফিরে যাওয়ার বদলে সমস্যা সমাধানে নির্দিষ্ট দিনে বাসিন্দারা আসছেন। তবে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যে কাজ হচ্ছে তা নয়। অনেকের কাজ বিজ্ঞপ্তির বাইরেও করতে হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তির সিদ্বান্ত আমাদের অফিস থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনও নির্দেশ নেই।