অভিযোগ একই ‘পুলিসকে শাসানি’ নেতার নামে মামলা, বিধায়ক বলে ছাড়!
বর্তমান | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, কাটোয়া: বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের স্টাইলে এবার পুলিসকে হুমকি দিলেন ক্ষীরগ্রামের অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি মাসদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দোষীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। নাহলে আপনাদের হাতে চুড়ি পরিয়ে দেব।’ এমন বক্তব্যের জেরে তৃণমূলের ওই নেতার বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করল পুলিস। ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, পুলিসকে হুমকি দেওয়ায় পুলিস মামলা রুজু করেছে। তবে ফ্লেক্স পোড়ানো নিয়ে পুলিসকে বলা হয়েছে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে। প্রসঙ্গত, মঙ্গলকোটের কুড়ুম্বা গ্রামে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ফ্লেক্স পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সোমবার রাতের ঘটনার পর মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায়। দুপুরে কৈচরে বর্ধমান-কাটোয়া রাস্তা অবরোধ থেকে বিকেলে মহিলাদের পুলিস ফাঁড়ি ঘেরাও করা হয়। তখনই মাসদুর পুলিসের উদ্দেশে ওই হুঁশিয়ারি দেন। এমনকী বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী পুলিসের উদ্দেশে বলেন, ‘নপুংসক পুলিস। এটা আমরা চাই না।’
এরপরেই বুধবার রাতে মঙ্গলকোট থানার পুলিস মাসদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। এনিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূল বিধায়ক পুলিসকে ‘নপুংসক’ বলে আক্রমণ করলেও পুলিস তাঁর বিরুদ্ধে কোনও মামলা রুজু করেনি। মঙ্গলকোটের বিজেপি নেতা রানাপ্রতাপ গোস্বামী বলেন, এখান থেকেই প্রমাণিত, পুলিস তৃণমূলের বিধায়ককে ভয় পাচ্ছে। তাই তাঁর নামে মামলা দায়ের করেনি।
এদিকে অনুতপ্ত মাসদুর বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের কাছে মায়ের সমান। তাই তাঁর ছবি দেওয়া ফ্লেক্স পুড়িয়ে দেওয়ায় মাথার ঠিক ছিল না। ভবিষ্যতে আর এমনটা হবে না। মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি পুড়িয়ে দেওয়া হল। অথচ দোষীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না। কারা এমন কাজ করেছে, এটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্য নেতৃত্বের কাছেও অনুরোধ জানাচ্ছি।
১ জানুয়ারি রক্তদান শিবিরের ফ্লেক্স টাঙানো নিয়ে মঙ্গলকোটে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা হয়। তার জেরেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে।