• গোরু নিয়ে চিতাবাঘ–মানুষের টানাটানি, শিকার ছেড়ে জঙ্গলে শ্বাপদ
    এই সময় | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, আলিপুরদুয়ার: বুধবার সন্ধ্যায় একটি নধর গোরু নিয়ে চিতাবাঘ ও মানুষের প্রায় আধা ঘণ্টা টানাটানি চলে আলিপুরদুয়ারের কুমাগ্রাম ব্লকের পূর্ব চকচকা এলাকায়। যদিও শেষ পর্যন্ত জয়ী হয় মানুষ। শিকার ছেড়ে বুনোটি ফিরে যায় তার আস্তানায়। কিন্তু চিতাবাঘের কামড়ে গুরুতর জখম হয়েছে গোরুটি। রায়ডাক ২ নম্বর নদীর ধারে পূর্ব চকচকায় একটি প্রান্তিক জনপদ রয়েছে।

    বুধবার সন্ধ্যা ছটা নাগাদ আচমকাই বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল ছেড়ে খাবারের খোঁজে বেরিয়ে আসে একটি চিতাবাঘ। স্থানীয় এক গৃহস্থ বাড়ির গোয়ালের বেড়া ভেঙে বেঁধে রাখা একটি গরুকে প্রায় একশো মিটার টেনে নিয়ে যায় সেটি। বিষয়টি টের পেয়েই বাড়ির মালিক লাঠি হাতে ছোটেন ওই চিতাবাঘের পেছনে।

    তাঁর চিৎকারে চলে আসেন গ্রামবাসীরাও। দেখা যায় এক বিরল দৃশ্য। লেপার্ডটির মুখে গোরুর ঘাড়। আর পোষ্যর ঠ্যাং ধরে টানছেন গোরুর মালিক। আর বাকি গ্রামবাসীরা সুযোগ পেলেই লাঠির ঘা বসাচ্ছেন চিতাবাঘটির শরীরে। সন্মিলিত ‘আক্রমণ’–এর মুখে পড়েও সহজে হার মানেনি লেপার্ডটি। তবে আধ ঘণ্টা পর রণে ভঙ্গ দিয়ে শিকার ছেড়ে অন্ধকারে জঙ্গলে মিলিয়ে যায় বুনোটি।

    গরুর মালিক প্রেমানন্দ বর্মন বলেন, ‘সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ আচনকা একটা আওয়াজ পেয়ে চমকে উঠি। সঙ্গে গোরুর গোঙানিও কানে আসে। বেরিয়ে দেখি একটা চিতাবাঘ আমার গোরুটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। পিছু ধাওয়া করে জন্তুটির মুখ থেকে গোরুটিকে ছিনিয়ে নিয়ে আসি।’

    ঘটনার খবর পেয়ে বনকর্মীরা চলে আসেন। ফেলে যাওয়া শিকারের খোঁজে ফের লেপার্ডটি হানা দিতে পারে। তাই গ্রামবাসীদের রাতে আগুন জ্বালিয়ে রেখে পাহারা দেওয়ার পরামর্শ দেন বনকর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকাল হতেই বন দপ্তরের পক্ষ থেকে গ্রামের বাসিন্দাদের সতর্ক করতে দফায় দফায় মাইকিং করা হয়। যদিও তাতে আতঙ্ক কাটেনি এলাকায়। জখম গোরুটির চিকিৎসার দায়ভার নিয়েছে বন দপ্তর।

    বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প পূর্বের ভলকা রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার প্রভাত বর্মন বলেন, ‘পায়ের ছাপ পরীক্ষা করে আমাদের অনুমান ওটি স্ত্রী চিতাবাঘ ছিল। এমনকী, অন্তঃসত্ত্বাও হয়ে থাকতে পারে। ফলে সহজ শিকারের আশায় গোরুকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। আমরা সতর্ক আছি। অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।’

  • Link to this news (এই সময়)