• ডেরা পাল্টাচ্ছে জ়িনাত! বান্দোয়ান ছাড়িয়ে বাঘিনি এখন মানবাজারের রাস্তায়
    এই সময় | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ঘরে ফেরার মেজাজে নেই বাঘিনি জ়িনাত! তাকে দেওয়া একের পর এক টোপ থেকে মুখ ফিরিয়েছে সে। এ বার ডেরাও পাল্টে ফেলেছে বাঘিনি। বান্দোয়ান ছাড়িয়ে এ বার পার্শ্ববর্তী ব্লক মানবাজারের পথে জ়িনাত। অন্তত সূত্রের খবর এমনটাই। সেখানে কাদা মাটিতে তার পায়ের ছাপও দেখা গিয়েছে। সেই ছাপ পরীক্ষা করে দেখছেন বন দপ্তরের কর্মীরা। 

    বান্দোয়ানের রাইকা,ভাঁড়ারির পর এ বার মানবাজার ২ নম্বর ব্লকের শুশুনিয়া বুরুডি এলাকায় ঢুকে পড়েছে জ়িনাত, ব্লক প্রশাসন সূত্রে এই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকালে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মানবাজার ২ নম্বর ব্লকের বিডিও কর্তৃক একটি সতর্কবার্তা পাওয়া যায় এ প্রসঙ্গে। বন দপ্তর সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে বুরুডি সংলগ্ন জঙ্গলে অবস্থান করছে বাঘিনি জ়িনাত। বন দপ্তরের তৎপরতা শুরু হয়েছে ওই এলাকায়। এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হয়েছে। পাশাপাশি জ়িনাতকে বাগে আনার জন্যও বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। 

    জ়িনাতের ডেরা পাল্টানোয় একদিকে যেমন সমস্যায় পড়েছে বন দপ্তর, তেমনই অন্য কোনও ডেরাতে সে গেলে তাকে বাগে আনার ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধা হতে পারে বলে মনে করছেন বন দপ্তরের আধিকারিকরা। যে অঞ্চলে এ সময় বাঘিনি অবস্থান করছে সেখানে  জনবসতি রাইকা এলাকার তুলনায় অনেকটাই বেশি। ফলে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষিত রাখা বন দপ্তরের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে, ওই এলাকার জঙ্গল খুব বেশি ঘন নয়। রাইকার মতো পাহাড় টিলা অধ্যুষিতও নয়। এ জন্য তাকে ট্র্যাক করা অনেক সহজ হতে পারে বলে মনে করছেন বন দপ্তরের কর্মীরা। কংসাবতী দক্ষিণ বন বিভাগের ডিএফও পূরবী মাহাতো এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাঘিনিকে ধরার চেষ্টা হচ্ছে। ওই এলাকায় বন দপ্তরের কর্মীরা পৌঁছে গিয়েছে।’

    মহারাষ্ট্রের আন্ধেরি–তাডোবার জঙ্গল থেকে জ়িনাতকে আনা হয়েছিল ওডিশার সিমলিপালে। গত ২৪ নভেম্বর সিমলিপাল টাইগার রিজ়ার্ভের মুক্ত জঙ্গলে তাকে ছাড়া হয়েছিল। কিন্তু বছর তিনেকে জ়িনাতের সেখানে বেশিদিন মন টেকেনি। মঙ্গলবার সে এসে পৌঁছয় ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়ার জঙ্গল এলাকায়। এর পর ঝাড়গ্রাম হয়ে পুরুলিয়ার জঙ্গলে পৌঁছয় সে। কোনওভাবেই ঘরে ফিরতে নারাজ জ়িনাত। একাধিক টোপ রাখা হয়েছে তার জন্য। কিন্তু কোনটাই গ্রহণ করেনি সে। 

    জ়িনাতের গলায় একটি রেডিও কলার রয়েছে, যার মাধ্যমে তার অবস্থান জানা সম্ভব। কিন্তু গভীর জঙ্গলে সিগন্যাল হারিয়ে যাওয়ায় বিপত্তি বাড়ছে বন দপ্তরের কর্মীদের। ট্রাঙ্কুলাইজ়ার টিম, স্যাটেলাইট মনিটরিং, থার্মাল ইমেজ স্ক্যানিং, নাইট ভিশন ড্রোন মনিটরিং কোনও ফাঁদেই পা দিতে নারাজ বাঘিনি। তবে তাকে নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই, জানাচ্ছেন বন দপ্তরের কর্মীরা।

    (তথ্য সহায়তা: সঞ্চিতা মুখোপাধ্যায়)

  • Link to this news (এই সময়)