• অঙ্কুরহাটিতে তরুণীর ভাইরাল চায়ের দোকান বন্ধ করল ক্লাব
    এই সময় | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, ডোমজুড়: আধুনিক পোশাক পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় রিল বানিয়েছেন তরুণী। সেই ‘অপরাধে’ তাঁর চায়ের দোকান বন্ধ করে দিল গ্রামের মানুষ ও স্থানীয় একটি ক্লাব। গত প্রায় তিন সপ্তাহ দোকান খুলতেই পারছেন না তরুণী। ফলে তাঁর ও ওই চায়ের দোকানে কাজ করা দুই কর্মীর রুটিরুজিতে টান পড়েছে। সুবিচারের আশায় ওই তরুণী ডোমজুড় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

    কিন্তু এ নিয়ে এখন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি ডোমজুড় থানা। তরুণী জানিয়েছেন, পুলিশের বক্তব্য, তাঁর দোকান সরকারি জমির উপর। তাই পুলিশের বিশেষ কিছু করার নেই।

    গত মাস চারেক আগে ডোমজুড়ের ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে অঙ্কুরহাটির প্রশস্থে টিন দিয়ে ঘেরা একটি চায়ের দোকান চালু করেন তরুণী। নাম দেন টিআমো। কিন্তু সুন্দরী ওই তরুণীর দোকান ‘রাশিয়ান চায়ওয়ালি’ নামে ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। তিনি সন্ধ্যেবেলা দোকান খুললেই অঙ্কুরহাটির ওই জায়গায় সার্ভিস রোডের ধারে ভিড় জমে যেতে থাকে। দূরদুর থেকে চা খেতে মানুষজন ভিড় জমান চায়ের দোকানে।

    ওই তরুণীর বাড়ি হাওড়ার আন্দুলে। তরুণী জানিয়েছেন, কারও সঙ্গে তাঁর কোনও বিরোধও ছিল না। সমস্যা তৈরি হয় মাস খানেক আগে। আচমকা স্থানীয় একটি ক্লাবের কিছু সদস্য তরুণীর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে তাঁর বিভিন্ন ছবি ও আধুনিক বেশবাস নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন।

    তিনি স্থানীয় ক্লাবের কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, ক্লাবের সদস্য ও গ্রামের সকলের সিদ্ধান্ত তাঁর জন্য এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তাঁর পোশাক ও মেয়ে হয়ে সেজেগুজে চায়ের দোকানদারি করাটা শোভনীয় নয়। এতে স্থানীয় অন্য অল্পবয়সী মেয়েরাও প্রভাবিত হতে পারেন। তাই তিনি আর দোকান খুলতে পারবেন না। এর কয়েকদিন পরে তাঁর দোকানের বিদ্যুতের লাইনও কেটে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ৬ ডিসেম্বর তাঁর দোকানের পাশের এক দোকানদার তাঁকে ফোন করে বলেন, ‘দোকানে পোস্টার পড়েছে। অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করা হলো দোকান।’

    এর পরেই তরুণী কয়েক জনের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় রিল বানানোর জন্য গ্রামবাসীরা ও ক্লাবের সদস্যরা এই কাজ করেছেন।

    খরিদ্দারদের অনেকে বলছেন, ‘একজন মেয়ে হয়ে কেউ যদি চায়ের দোকান করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে তাতে আপত্তি কোথায়? সোশ্যাল মিডিয়ায় কে কী করবেন, তা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। মুখ্যমন্ত্রী বেকার তরুণ–তরুণীদের সরকারি চাকরির অপেক্ষা না করে নিজের উদ্যোগে চায়ের দোকান, কফিশপ, ফাস্টফুডের দোকান করার পরামর্শ দিয়েছেন।’ তরুণীর অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি ডোমজুড় থানাও।

  • Link to this news (এই সময়)