• নিয়োগ দুর্নীতি ইডির মামলায় চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু
    এই সময় | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: তাঁর দু’টি ফ্ল্যাট থেকে যে ৫০ কোটি পাওয়া গিয়েছিল, তা রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের — প্রথম থেকেই এই দাবি করে এসেছিলেন পার্থর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।

    বৃহস্পতিবার বিচার ভবনে ইডি–র বিশেষ আদালতে দুর্নীতি মামলায় চার্জ গঠনের দিন, একই অভিযোগ উঠে এলো ইডি–র কথায়। এই প্রথম। জেরায় অর্পিতার কাছ থেকে পাওয়া তথ্য থেকে এমনটাই জানিয়েছে ইডি। এ দিন পার্থকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ৫৪ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোন কোন ধারায়, কী কী অভিযোগ রয়েছে তা এ দিন পড়ে শোনান ইডির আইনজীবি ভাস্কর প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়।

    আর সেখানেই উঠে আসে টাকার প্রসঙ্গ। ইডি জানায়, ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে একাধিক সম্পত্তি করেছেন পার্থ। তাঁর স্ত্রীর নামেও স্কুল রয়েছে। একাধিক কোম্পানিতে পার্থ ডামি ডিরেক্টর ছিলেন। কোম্পানিগুলি প্রকারান্তরে তিনিই তৈরি করেছিলেন। অর্পিতাও ক্রাইমের পার্ট ছিলেন। কোটি কোটি টাকা রাখতে ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন তাঁর ফ্ল্যাট ও অ্যাকাউন্ট। ইডির জেরায় অর্পিতা জানিয়েছেন, ওই ৫০ কোটি টাকা পার্থরই।

    আদালতে ইডির দাবি, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি, অভিযুক্ত মানিক ভট্টাচার্য এই দুর্নীতিতে সক্রিয় অংশ নিয়েছিলেন। বিভিন্ন বেসরকারি বিএড কলেজে ভর্তি নেওয়ার সময়ে অযোগ্য স্টুডেন্ট–প্রতি পাঁচ হাজার টাকা করে নিয়েছিলেন। টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

    অভিযুক্ত তাপস মণ্ডল ষড়যন্ত্রে মানিকের সহযোগী ছিলেন। অযোগ্যদের থেকে টাকা নিয়েছেন তিনিও। অযোগ্য স্টুডেন্টেদর নির্বাচন ও তাঁদের তালিকা তৈরিতে ভূমিকা ছিল কুন্তল ঘোষের। পার্থ–মানিকের সঙ্গে তাঁর প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল। প্রায় ৩৪ জন অযোগ্য প্রার্থীর কাছ থেকে কুন্তল ১৬ কোটি টাকা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। আদালতে ইডি–র দাবি, কুন্তলের সঙ্গে হাতে–হাত মিলিয়ে এই দুর্নীতিতে অংশ নিয়েছিলেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এ ছাড়াও সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু–র সঙ্গে মানিক, পার্থ, শান্তনু, কুন্তলের যোগ মিলেছে।

    এ দিন পার্থর আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামীর অভিযোগ, ইডি তাঁদের যে কপি দিয়েছে তাতে কারও সই নেই। স্টেটমেন্ট রেকর্ডের টাইপ কপি দিয়েছে। এজলাসে বিপ্লবের প্রশ্ন, তাঁদের কাছে যে নথি রয়েছে, আর আদালতে ইডি যা জমা করছে তা আলাদা না তো? কারণ আদালতে সই করা কপি জমা করা হয়েছে। বিচারক ইডি–র কাছে জানতে চান, দুটো কপি একই হবে কি না তা নিশ্চিত করে বলতে হবে ইডিকেই। ইডির তরফে জানানো হয়, দুটো কপি একই।

    পার্থকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী। আদালত সূত্রে খবর, এই মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন তাপস, কুন্তল, এস বসু রায় কোম্পানি–সহ আরও কয়েকজন। আদালত জানিয়েছে, যাঁরা অব্যাহতি চেয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আজ, শুক্রবার শুনানি হবে। অভিযুক্তদের শুক্রবার ভার্চুয়ালি হাজির দিলেও চলবে।

  • Link to this news (এই সময়)