• ঝাড়গ্রামের টিয়াকাটি গ্রামে মেলার মূল আকর্ষণ মোরগ লড়াই
    বর্তমান | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্রামে টিয়াকাটি গ্ৰাম্য মেলার ঐতিহ্য মোরগ লড়াই। বৃহস্পতিবার থেকে এই মেলা শুরু হয়েছে। মোরগের বাঁ পায়ে লাগানো থাকে ধারালো ফলা তথা কাইত। বাঁশ দিয়ে ঘেরা ছোট জায়গায় লড়াই হয়। সেই লড়াই দেখতে দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষজন ভিড় জমান।  টিয়াকাটি আদিবাসী সপ্তরথী ক্লাবের উদ্যোগে তিনদিন ধরে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মোরগ লড়াই ছাড়াও ফুটবল প্রতিযোগিতা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও থাকছে। 


    টিয়াকাটি গ্ৰাম্য মেলায় মোরগ লড়াই ঘিরে দর্শকদের মধ্যে থাকে চরম উত্তেজনা। মিনিট খানেকের লড়াইয়ে নিশ্চিত হয় জয় পরাজয়। প্রায় ৫০ বছর আগে এই মেলার সূচনা হয়েছিল। মেলায় লড়াইয়ে সঙ্গে মোরগ কেনাবেচাও হয়। লড়াইয়ের মোরগের দাম ওঠে ১৬ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তিন থেকে চার মাস আগেই মোরগ মালিকরা লড়াইয়ের জন্য মেলা কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। তার আগে লড়াইয়ে জন্য মোরগটিকে তালিম দেওয়া হয়। 


    মেলার দিন সকাল সকাল মোরগ মালিকরা মাঠে চলে আসেন। লড়াই শুরুর আগে পায়ে শক্ত করে কাইত বা ফলা বেঁধে দেওয়া হয়। লড়াই করার সময় দুটি মোরগ কখনো ডানা ঝাপটে শূন্যে ওঠে। কখনো আবার একে অপরের ওপর  ঝাঁপিয়ে পড়ে। মোরগ লড়াই ঘিরে দর্শকরাও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। লড়াইয়ে জখম হওয়া মোরগের চিকিৎসার ব্যবস্থাও থাকে। জয়ী মোরগ মালিক গর্বের সঙ্গে নিজের মোরগের সঙ্গে পরাজিত মোরগটি নিয়ে মাঠ ছাড়েন। পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুণ্ডা এলাকার চড়কাবনী গ্ৰামের বাসিন্দা বিকাশ চালক বলেন, এবার লড়াইয়ের জন্যে তিনটে মোরগ এনেছিলাম। লড়াইয়ে তিনটি মোরগই জিতেছে। এবার সঙ্গে আরও তিনটি মোরগ নিয়ে বাড়ি ফিরছি।


    গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের বাসিন্দা সনাতন কুইলা বলেন, এক ব্যক্তির কাছে মোরগটা কিনেছিলাম। খুব তেজি। পুরুলিয়া থেকে ফলা বিক্রি করতে আসা তারাপদ কর্মকার বলেন, বংশ পরম্পরায় আমরা ফলা তৈরি করি। মোরগ লড়াইয়ে ধারালো ফলার ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। 


    টিয়াকাটি আদিবাসী সপ্তরথী ক্লাবের এক কর্মকর্তা বাদল সরেন বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে মেলা শুরু হয়েছে। তিনদিন ধরে এই মোরগ লড়াই চলবে। এই মেলার আরও একটি আকর্ষণ মোরগ কেনাবেচা। এবার ভালো লড়াইয়ের মোরগের দাম ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছে। আগামী শুক্রবার থেকে ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু হবে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হবে। ঝাড়গ্রাম ছাড়া ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ড থেকেও বহু মানুষ এই মেলায় আসেন।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)