চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার
ঘটনা সামনে আসার পর তিন দিন পেরিয়ে গেলেও ডাউয়াগুড়িতে জোড়া খুন কাণ্ডে এখনও অভিযুক্ত প্রণব বৈশ্যকে ধরতে পারেনি পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অভিযোগ, বাবা ও পিসতুতো দাদাকে খুন করে বাইক চালিয়ে গ্রাম থেকে বেরিয়ে যায় ওই যুবক।
জেলা পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছেন। অভিযুক্তের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনের দিকে নজর রাখছেন তদন্তকারীরা। যদিও সূত্রের খবর, গা ঢাকা দেওয়ার পর অধিকাংশ সময়েই মোবাইল বন্ধ রেখেছে প্রণব। তাছাড়া সে অর্থে তার নিকট আত্মীয় বা বন্ধুবান্ধব না থাকায় মোবাইল ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ছে না তার।
এত বড় ঘটনার পর তদন্ত বর্তমানে কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন পুলিশ কর্তারা। এদিকে খুন হওয়ার পর তিন দিন কেটে গেলও মামা ও ভাগ্নের দেহ এখনও পড়ে রয়েছে কোচবিহার এম জে এন মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের মর্গে। কবে সৎকার হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত রয়েছে।
প্রণবকে ধরতে তার মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনই ভরসা পুলিশের। এর আগে জানা গিয়েছিল, খুনের ঘটনার দিন সে তার মোটরবাইকে তেল ভরে অসমের দিকে চলে গিয়েছে। একটি পেট্রল পাম্পের সিসিটিভি ক্যামেরায় তা ধরা পড়েছে। পরে জানা যায়, অভিযুক্তের শেষ টাওয়ার লোকেশান শিলিগুড়ি দেখিয়েছে। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়গুলি নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
এদিকে বিজয়কুমার বৈশ্য ও গোপাল রায়ের দাহকার্য করতে বৃহস্পতিবার গ্রামবাসীরা একটি লিখিত আবেদনপত্র তৈরি করেছেন। সেই আবেদনপত্রে গ্রামের বাসিন্দাদের সকলের সই নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ভাস্কর বৈশ্য বলেন, ‘দাহকার্য ও শ্রাদ্ধের কাজকর্ম করতে গোরু বিক্রির সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছে। সে বিষয়টি থানায় জানিয়ে একটি আবেদন বৃহস্পতিবার করা হয়েছে। সেখান থেকে অনুমতি নিয়ে কাজ করা হবে।’ গতকাল এ বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত বিজয়ের গোলা ভর্তি ধান, কলাবাগান এবং বাড়ি ও জমি কে দেখাশোনা করবে, সেটাই এখন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মৃতের এক বোন রয়েছেন বহরমপুরে। তিনি ছাড়া আর কোনও আত্মীয়র সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাঁকে ফোন করে বেশ কয়েকবার ডাউয়াগুড়িতে আসার অনুরোধ করেছেন স্থানীয়রা।
কিন্তু তিনি এই পরিস্থিতিতে আসতে চাইছেন না। ফলে নিহতের জমি–বাড়ি নিয়ে সমস্যা আরও গভীর হয়েছে। এদিকে যে বাড়িতে বিজয়দের চারটি গোরু রাখা ছিল। সেই বাড়ির মালিক আর গোরুগুলোর দায়িত্ব নিতে রাজি নন। ফলে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে সমস্যা তৈরি হয়েছে।