শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলায় বিক্রি হবে ৩৩ লক্ষের শাড়ি! দাম শুনে অনেকেরই ভিরমি খাওয়ার জোগাড়। সে শাড়ি যে সহজে বিক্রি না হবে না তা বিলক্ষণ জানেন ব্যবসায়ী। তবু সে শাড়ি দেখতে আসার লোকের অভাব হবে না—তাও অজানা নয় এই শাড়ি তৈরি করা শিল্পীর।
শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলায় বিক্রির অপেক্ষায় বিশেষ ধরনের শাড়ি। শাড়িগুলিতে ফুটে উঠেছে সীতা হরণ থেকে শুরু করে মহাভারতের কাহিনি। এছাড়াও রয়েছে রাজ্যের কন্যাশ্রী থেকে সবুজ সাথী প্রকল্পের উপরেও শাড়ি। এই শাড়িগুলি তৈরি করেছেন মমতাজ বেগম।তিনি বীরভূমেরই বিখ্যাত বস্ত্রশিল্পী। জেলাস্তরে ছ’বার পুরস্কার পেয়েছেন। দু’বার সরকারি সহায়তায় অংশগ্রহণ করেছেন আমেরিকার প্রদর্শনীতে। তিনি একটি ‘নব দুর্গা’ শাড়ি তৈরি করেছেন।এর দামই ৩৩ লক্ষ।
বোলপুরের নতুন পুকুরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মমতাজের একটি ওয়ার্কশপও রয়েছে। সেখানেই ২২০০ মহিলা কাপড় বোনার কাজ করেন। পাশাপাশি বহু মহিলাকে হাতের কাজ শিখিয়ে তাঁদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্যও সাহায্য করেন মমতাজ। তিনি এই ৩৩ লক্ষ টাকার শাড়ি তৈরি করেছেন।
মমতাজ বেগম বলেন, ‘আমরা ৪ জন মহিলা শিল্পী মিলে নব দুর্গা শাড়িটি তৈরি করেছি ৪ বছর ৪ মাসে। রামায়ণ, মহাভারতের কিছু অংশ আমি তুলে ধরেছি শাড়িটির মধ্য দিয়ে। তা তৈরি করতে ৪ মাস সময় লেগেছে। রামায়ণের উপর যে ওয়াল হ্যাংগিং শাড়িটি রয়েছে তা তৈরি করেছি তার দাম দেড় লক্ষ টাকা। দীর্ঘ সময় ধরে এই শাড়িটি তৈরি করা হয়েছে। ভাবনাও অভিনব। তাই এই শাড়িগুলির এত দাম।’
যদিও শাড়িগুলির দাম শুনে ঢোঁক গিলছে আম জনতা। এত টাকা দাম! তাও একটা শাড়ির! স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘সারা জীবনের আয় হয়তো ৩৩ লাখ হবে না। এই শাড়ি কেনার মতো ক্ষমতা আমার অন্তত নেই।’ তবে তাঁর শিল্পের কদর ঠিক মিলবে, আশায় মমতাজ। তাঁরা বলছেন, ‘মেলাতে তো লোকে শুধু কিনতে আসেন না, দেখতেও আসেন।আমাদের কাজ দেখে যাক তাঁরা।’
উল্লেখ্য, ২৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে পৌষমেলা। তা চলবে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত।