নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: চলছে অপারেশন প্রঘাত। এবার পশ্চিমবঙ্গ ও অসমে তরুণ যুবকদের মগজ ধোলাই করে জঙ্গি কার্যকলাপে উৎসাহিত করার মূল মাথা শাহিনুর ইসলামকে গ্রেপ্তার করল অসম এসটিএফ। ধুবুড়ি থেকে তাকে শুক্রবার পাকড়াও করা হয়েছে। স্থানীয় একটি খারিজি মাদ্রাসার আড়ালে জিহাদি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালাত শাহিনুর। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে দেশ বিরোধী লিফলেট। শাহিনুরের মোবাইলের মেসেজ পরীক্ষা করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, অনলাইনে নতুন জেহাদিদের নিয়োগর পর সে ধুবুড়িতে থিওরি ক্লাসে প্রশিক্ষণ নিতে আমন্ত্রণ জানাত। তার সঙ্গে বাংলাদেশি নাগরিক তথা এবিটি জঙ্গি মহম্মদ শাদ রবি ওরফে সাহেবের কথোপকথনের প্রমাণ পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
শাদকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, এবিটি প্রধান জসিমুদ্দিন রহমানির নির্দেশে ভারতে অনুপ্রবেশের পর অসমের ধুবুড়ির বাসিন্দা শাহিনুরকে সংগঠনের জন্য বাছাই করে। গোয়েন্দারা বলছেন, মগজধোলাই করতে শাদ অত্যন্ত পারদর্শী। জেহাদি ভাবধারা দিকে দিকে ছড়িয়ে দিতে তার জুড়ি মেলা ভার। সেই ভাবধারা প্রচারে মুর্শিদাবাদ ও অসমের বিভিন্ন জায়গায় জলসা করে বেড়াত। জলসার আড়ালে খিলাফত প্রতিষ্ঠার শপথ নেওয়াত শাদ। তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল নতুন যুবকদের ‘নিয়োগ’ করার। শাদ অফিসারদের জানায়, তার নির্দেশেই ভুয়ো নামে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে একাধিক প্রোফাইল খুলেছিল শাহিনুর। সেখানে সে গ্রুপ তৈরি করে অল্পবয়সী যুবকদের জেহাদি কার্যকলাপে উদ্বুদ্ধ করত। কীভাবে খিলাফত প্রতিষ্ঠা হবে, তাই নিয়ে দীর্ঘ বক্তৃতা দিত। তাকে দিয়ে একটি পেজ খোলানো হয়। যেখানে এবিটি প্রধান জসিমউদ্দিন রহমানির ভারত বিরোধী বিভিন্ন বক্তব্য আপলোড করা হতো। মগজ ধোলাইয়ের পর শাহিনুর নতুন মেম্বারদের শাদের কোর গ্রুপে যুক্ত করত। শাদই তদন্তকারীদের জানায়, সে ধুবুড়িতে রয়েছে। সে জেহাদি তৈরির ‘থিওরি’ ক্লাসের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলেছে। সেখানে হানা দিয়ে শাহিনুরকে গ্রেপ্তার করে অসম পুলিসের এসটিএফ।
তাকে জেরা করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, সেও একাধিকবার মুর্শিদাবাদে এসেছে। মিনারুলের বাড়িতে বৈঠক করেছে। সেখানে নতুন জেহাদিরা উপস্থিত থাকত। এমনকী হরিহরপাড়ায় যে খারিজি মাদ্রাসার সঙ্গে অপর এবিটি জঙ্গি আব্বাস আলি যুক্ত ছিল, সেখানে সে পড়িয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি অসমের ধুপড়ি, কোকরাঝোড় সহ একাধিক জেলায় খারিজি মাদ্রাসা চালাচ্ছে। সেখানে বাংলাদেশি শাদ এসেও একাধিকবার ভাষণ দিয়ে গিয়েছে। সে কতজন যুবককে এবিটিতে নিয়োগ করেছে এবং তারা কোথায় ‘প্র্যাকটিক্যাল’ প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, ধৃতকে জেরা করে জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।