রাজাবাজারে ভূগর্ভস্থ জল তুলে চলছে অবৈধ ব্যবসা, পদক্ষেপের নির্দেশ মেয়রের
বর্তমান | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: খাস কলকাতার বুকে রমরমিয়ে চলছে পানীয় জলের অবৈধ ব্যবসা। ভূগর্ভস্থ জল তুলে দেদার বিক্রি করা হচ্ছে। কলকাতা পুরসভার কেন্দ্রীয় ভবন থেকে মাত্র সাড়ে তিন কিলোমিটারের মধ্যে, রাজাবাজারে সাত বছর ধরে চলছে এই অবৈধ কারবার। সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন কলকাতা পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলার শচীন সিং। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। প্রসঙ্গত, ভূগর্ভস্থ জল তুলতে গেলে সুইড (স্টেট ওয়াটার ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট)-এর অনুমতি জরুরি। এক্ষেত্রে সেই অনুমতি নেই বলেই অভিযোগ। গত সপ্তাহে পুরসভার মাসিক অধিবেশনে ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শচীন সিং দাবি করেন, ২৫ নম্বর, নর্থ শিয়ালদহ রোডে দিনের পর দিন চলছে অবৈধ জলের কারবার। হাজিপাড়া বস্তিতে এই ব্যবসা চালাচ্ছেন লতিফ খান ওরফে পাপ্পু খান। তাঁর আরও দাবি, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বিভিন্ন জায়গায় জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। জল তোলার জন্য সুইডের যে অনুমতি প্রয়োজন, তা লতিফ খানের নেই বলেই দাবি শচীনের। কাউন্সিলারের অভিযোগ যে অনেকাংশেই সত্য, ওই ঠিকানায় গিয়ে তার প্রমাণ মিলেছে বলে পুরসভার বিভাগীয় সূত্রে খবর। এমনকী, সেখানে একদিকে যেমন স্থানীয় জল কোম্পানির ড্রাম রয়েছে, তেমনই রয়েছে বহুজাতিক সংস্থার জলের পাত্রও। তবে কাউন্সিলারের তোলা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লতিফ খান। সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁর দাবি, ট্রেড লাইসেন্স, ফ্যাসাই, আইএসও সহ বিভিন্ন কাগজ তাঁর কাছে রয়েছে। উল্টে কাউন্সিলারের বিরুদ্ধেই নানা অবৈধ কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনেছেন তিনি। তবে তাঁর কাছে যে সুইডের অনুমতি নেই, তা স্বীকার করে নিয়েছেন লতিফ।
তবে রাজাবাজারের এই ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপ করছে কলকাতা পুরসভা। জল এবং স্বাস্থ্যবিভাগকে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র। তিনি বলেন, ‘এটা ইমিডিয়েট বন্ধ করতে হবে। বিভিন্ন কোম্পানির নাম নকল করে জলের ব্যবসা করা হচ্ছে। এটা বড় ক্রাইম। ডুপ্লিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। এটা মানুষের জনস্বাস্থ্যের বিষয়। লাইনটাই কেটে দিতে হবে। পুলিস যাতে অ্যারেস্ট করে, সেটা দেখতে হবে।’ তবে লতিফ খান সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, সাত-আট মাস আগে সুইডের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। শীঘ্রই তিনি তা পেয়ে যাবেন।