এই সময়: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গী অভিযুক্ত সরকারি অফিসারদের জামিন আটকে যাওয়ার পিছনে রাজ্যের স্যাংশন না–দেওয়া যে বড় কারণ, দু’দিন আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী তাঁর রায়ের ছত্রে ছত্রে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন।
এখন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ–সহ বেশ কয়েকজনের নামে চার্জশিট জমা পড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়দের মতো সন্দীপ ঘোষের ক্ষেত্রেও ট্রায়াল শুরুর জন্য মুখ্যসচিবের স্যাংশন বাধ্যতামূলক কি না। যদি তা বাধ্যতামূলক হয়, সে ক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতির মতোই আরজি করের দুর্নীতির মামলার বিচারও দীর্ঘায়িত হবে কি না, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে।
আরজি কর হাসপাতালের দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা যে চার্জশিট জমা দিয়েছেন, তাতে সন্দীপই মূল অভিযুক্ত। এই মামলা প্রথম শুরু হয়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের দায়ের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই।
ফলে প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে রাজ্যই দুর্নীতির অভিযোগে এফআইআর করেছে, সেখানে ওই মামলায় অভিযুক্ত সরকারি অফিসারের বিরুদ্ধে রাজ্যের স্যাংশন কতটা জরুরি, তা নিয়ে আইনি দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। যদিও রাজ্যের প্যানেলভুক্ত এক সিনিয়র আইনজীবী বলছেন, যতই রাজ্য এফআইআর করুক, সরকারি অফিসার যখন অভিযুক্ত, তখন তাঁর বিরুদ্ধে ট্রায়াল শুরুর আগে সরকারের স্যাংশন জরুরি–ই।
আবার সুপ্রিম কোর্টে ইডি–র মামলার অন্যতম দক্ষ আইনজীবীর বক্তব্য, তদন্তকারী সংস্থা চার্জশিট কী ভাবে ফ্রেম করেছে, তার উপরে সন্দীপের ক্ষেত্রে স্যাংশন লাগবে কি না, তা নির্ধারিত হবে। ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি দুর্নীতির তদন্তে এজেন্সি চার্জশিটে তিনি ব্যাক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে সরকারি কাজের বাইরে গিয়ে এই কাজ করেছেন বলে দেখায়, তখন স্যাংশন জরুরি হবে না।
কিন্তু যদি দেখানো হয়, তিনি সরকারি দপ্তরে নথি সই–সাবুদের মধ্যেই এই দুর্নীতি করেছেন, তখন স্যাংশন বাধ্যতামূলক।’ তাঁর বক্তব্য, শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্তরা সরকারি কাজের মধ্যেই ওই বেআইনি নিয়োগ করেছেন বলে চার্জশিটে দেখানো হয়েছে। তাই স্যাংশন বাধ্যতামূলক। সেটা না–করলে মামলা হালকা হয়ে যেত।