• কোটার জাঁতাকলেই ট্রেনের টিকিট অমিল
    এই সময় | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, কোচবিহার: কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গে আসতে গিয়ে যে কোনও ট্রেনের টিকিট কাটতে গেলে একটাই শব্দ শুনবেন, ওয়েটিং। কেন অপেক্ষার তালিকায় থাকা? এর নেপথ্যে কারণ কী? রেলের অন্দরে ঢুঁ মারলে শোনা যায় একটাই কথা, এই ওয়েটিংয়ের জন্য দায়ী কোটা পদ্ধতি।

    ভারতীয় রেলের সবক’টি ট্রেনে ছোট–বড় স্টেশন অনুযায়ী আসন সংরক্ষণের কোটা থাকে। এর উপর রয়েছে, তৎকাল, প্রিমিয়াম তৎকাল। ফলে টিকিট পেতে মাথা খোঁড়েন আমজনতা। তাই নতুন বছরের আগে উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনের টিকিট মিলছে না। কলকাতা–শিলিগুড়ি পর্যন্ত একাধিক বেসরকারি সংস্থার আধুনিক ভলভো বাস থাকলেও,কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারে আসতে ভরসা উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের মান্ধাতা আমলের রকেট বাস।

    একটি ট্রেনের স্লিপার এবং এসি থ্রি টিয়ার এলএইচবি কোচে ৮০টি আসন থাকে। আবার পুরনো আমলের আইসিএফ কোচ হলে আসনের সংখ্যা কমে ৭২টি হয়। আবার এসি টু টিয়ারে এলএইচবি কোচে আসন সংখ্যা ৫৪। আইসিএফ কোচে ৪৬। শিয়ালদহ থেকে নিউ আলিপুরদুয়ারে আসা পদাতিক এক্সপ্রেসে কোচ রয়েছে ২২ টি। তার মধ্যে সংরক্ষিত আসন রয়েছে ১ হাজার ২০০টি।

    তাতে শিয়ালদহের কোটা, বর্ধমানের কোটা, বোলপুরের কোটা, রামপুরহাটের কোটা রয়েছে। এভাবে বিভিন্ন স্টেশনের আলাদা করে কোটা ভাগ করা হয়। তাই ওই ট্রেনে যদি আপনি নিউ জলপাইগুড়ি আসেন তাহলে যে সংখ্যক কোটা নিউ জলপাইগুড়ির রয়েছে, সে টিকিট বিক্রি হয়ে যেতেই বাকি সবই ওয়েটিংয়ে চলে যায়। তারপর বিভিন্ন এজেন্ট, ট্যুর অপারেটর,টিকিটের কালোবাজারিদের ফাটকা শুরু হয়।

    রেলের একশ্রেণীর কর্মীর এদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। তারাও তৎকালের টিকিট বিভিন্ন উপায়ে কেটে রাখে। সেই সব টিকিট পরে চড়া দামে বিক্রি হয়। বড়, বড় রেল স্টেশনে আরপিএফদের একটি কোটা রয়েছে। সেই কোটা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। এই কোটাও এজেন্ট ও দালালদের হাত ধরে চড়া দামে বিক্রি হয়।

    আলিপুরদুয়ারের এক রেল কর্মী বলেন, ‘আমার ছেলে বাইরে পড়াশোনা করে। পুজোর সময় বাড়িতে আসবে। কোনওভাবেই টিকিট পাচ্ছিলাম না। সেই সময় এক ট্যুর অপারেটরের মাধ্যমে টিকিট পাই। পরে জানতে পারি সেটা আরপিএফ কোটাতে হয়েছে।’ আর যাঁরা বারোমাস যাতায়াত করেন, তাঁরা আগে থেকেই টিকিট কেটে রাখার ফলে পরে টিকিট কাটতে আসা মানুষরা ওয়েটিংয়ের তালিকায় চলে যান।

  • Link to this news (এই সময়)