এই সময়: ২০ নভেম্বর বরফে ঢেকেছিল সান্দাকফু। পাহাড়ে শুরু হয়েছে পারাপতন। এ বার কি দার্জিলিং শহরে স্নো–ফল হবে? বছর শেষে বর্তমানে দার্জিলিং–সহ উত্তরবঙ্গে পাহাড়ের সর্বত্র পর্যটকের ঢল। তারই মধ্যে পাহাড়ে তুষারপাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। নেপথ্যে পশ্চিমি ঝঞ্ঝা। তার জেরে শনি এবং রবিবার কালিম্পংয়ে শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। তার জেরেই দার্জিলিংয়ে তুষারপাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। শুক্রবার দার্জিলিংয়ের তাপমাত্রা ০.৮ ডিগ্রিতে নেমে যাওয়ায় সেই সম্ভাবনা আরও জোরদার হয়েছে।
২০২২ সালে রেকর্ড তুষারপাত হয়েছিল দার্জিলিং–কার্শিয়াংয়ের বিভিন্ন জায়গায়। সে বার দু’দশক পরে ঘুম এবং টাইগার হিল ঢেকেছিল বরফে। সেই ছবি এ বারও দেখা যাবে বলে আশায় বুক বাঁধছেন পর্যটকের দল। আগামী দু’দিন দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলাতেও হালকা বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। তবে কলকাতা এবং লাগোয়া এলাকায় বছর শেষে তাপমাত্রা আর কমার সম্ভাবনা নেই। নতুন বছরের শুরুতে কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২–৩ ডিগ্রি নামতে পারে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর।
সিকিম এবং দার্জিলিংয়ে শনিবার পশ্চিমি ঝঞ্ঝার জেরে সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। শুক্রবারই সিকিম লাগোয়া এলাকায় পশ্চিমি ঝঞ্ঝা ঢুকতে শুরু করেছে। আজ, শনিবার সেই ঝঞ্ঝা সক্রিয় হয়ে উঠবে। তার ফলে কালিম্পংয়ে শিলাবৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। সিকিমে তুষারপাত হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
এমনকী, দার্জিলিংয়ের উঁচু পাহাড়ি এলাকা সান্দাকফু, ফালুটেও তুষারপাতের সম্ভাবনা জোরালো। ঝঞ্ঝার জেরে দার্জিলিং এবং অন্যান্য এলাকায় শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তিন ডিগ্রি কমে ০.৮ ডিগ্রিতে নেমে যায়।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, শনিবার দার্জিলিংয়ের টাইগার হিল, ঘুম, সিকিমের লাচুং, লাচেন, ছাঙ্গু, নাথুলা এবং জুলুকে তুষারপাত শনিবার শুরু হয়ে যেতে পারে। রবিবার পর্যন্ত এই পরিস্থিতি চলতে পারে। ‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজ়ম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্ক’–এর সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘ইংরেজি নতুন বছরের আগে দার্জিলিংয়ে স্নো–ফল হোক, এটাই মনেপ্রাণে চাইছি। অনেক পর্যটক ভিড় করেছেন স্নো–ফল দেখার জন্য।’
আবহাওয়া দপ্তরের গ্যাংটক শাখার অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘দার্জিলিংয়ে স্নো–ফল হবে কি না, এখনই বলা যাচ্ছে না। কালিম্পংয়ে শিলাবৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। সেই কারণে স্নো–ফলের সম্ভাবনা উড়িয়েও দিতে পারছি না। কালিম্পংয়ে শিলাবৃষ্টি হলে দার্জিলিংয়ে স্নো–ফল হতেই পারে। কারণ, এ বার পশ্চিমি ঝঞ্ঝা বেশ শক্তিশালী।’ পাহাড়ে শীত ফিরলেও শিলিগুড়ি–সহ সমতলে কিন্তু তেমন শীতই নেই।
এ বছরের মার্চে বরফে ঢেকেছিল সান্দাকফু। ফলে এ বছরে এখনও পর্যন্ত দু’বার তুষারপাতের সাক্ষী হলো সান্দাকফু। এর আগে দীর্ঘ দু’দশকের পরে ২০২২ সালে রেকর্ড তুষারপাত হয়েছিল। সে বারের শীতে ৩৮ দিনের ব্যবধানে মোট ছ’বার তুষারপাত হয়েছিল।
শুক্রবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। দার্জিলিং-সহ কালিম্পং, কার্শিয়াঙের বেশ কিছু জায়গায় ঘন কুয়াশায় ঢেকে গিয়েছে। তার মধ্যেই তুষারপাত শুরু হয় ঘুম, টাইগার হিল, সান্দাকফু, চটকপুর। অন্যদিকে সিঙ্গালিলা রেঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় তুষারপাত হয়েছিল।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, শনিবার ও রবিবার পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদের কিছু কিছু জায়গায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। কলকাতায় বৃষ্টির পূর্বাভাস না থাকলেও আকাশ মোটের উপর মেঘলা থাকবে। তবে দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলায় আগামী ৫ দিন তাপমাত্রা মোটের উপর শুষ্কই থাকবে।