ধোপে টেকেনি বন দফতরের টোপ। একের পর এক এলাকা টপকে বাংলার দুই জেলার পাহাড়-জঙ্গল ঘুরে পলাতক বাঘিনি এখন বাঁকুড়ায়। বন দফতরের একটি সূত্রের খবর, শনিবার সকালে কুমারী নদী পার করে কাঁসাইয়ের পার ধরে এগিয়েছে জ়িনত। পুরুলিয়ার মানবাজার-১ ব্লকের ধানাড়া পেরিয়ে বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর জলাধারের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে সে। চেষ্টায় ত্রুটি রাখছে না বন দফতর। খবর পেয়ে জেলা বন দফতর তৎপর। কিন্তু বাঘিনিকে এখনও বাগে পাওয়ার খবর মেলেনি।
বন দফতরের আশঙ্কা, কাঁসাই জলাধার পার করে দক্ষিণ বাঁকুড়ার বারো মাইল জঙ্গলে ঢুকে যেতে পারে সিমলিপাল থেকে পালিয়ে আসা জ়িনত। শুক্রবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ডাঙরডি মোড়ে ঘেরা জালের ফাঁক দিয়ে পালিয়ে যায় সে। বন দফতরের কর্তারা মনে করছেন, এখনও পুরুলিয়ার গোপালপুর মানবাজার এলাকায় রয়েছে বাঘিনি। পুরুলিয়ার কংসাবতী দক্ষিণ ডিভিশনের বিভাগীয় বন আধিকারিক (ডিএফও) পূরবী মাহাতো বলেন, ‘‘পুরুলিয়ার গোপালপুর মানবাজার এলাকায় জ়িনতের অবস্থান মিলেছে। তবে পাশেই রয়েছে বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর জলাধার। বাঘিনিকে ‘ট্র্যাপ’-এ আনতে সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ পাশাপাশি তিনি সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত হতে বারণ করে জানিয়েছেন, বন দফতর সর্বদা বাঘিনির গতিবিধির উপর নজর রাখছে।
ওড়িশার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে প্রথমে ঝাড়খণ্ডে ঢোকে জ়িনত। তার পর এ রাজ্যের ঝাড়গ্রামের জঙ্গলপথ ধরে বাংলায় প্রবেশ করে সে। গত রবিবার বাঘিনি ঢোকে বান্দোয়ানে। টোপ দিয়ে ফাঁদ পেতে দিনের পর দিন অপেক্ষা করছেন বনকর্মীরা। কিন্তু বাঘিনি ধরা দেয়নি। গত বৃহস্পতিবার জঙ্গলে ঢুকে অভিযান চালিয়েছিলেন বনকর্মীরা। তার পরে ওই এলাকা ছেড়ে দেয় বাঘিনি। হয়তো বনকর্মীদের অভিযানের পর আর ওই জঙ্গল নিরাপদ মনে হয়নি জ়িনতের। এর পর পাইসাগোড়ায় আলুক্ষেতে বাঘের পায়ের ছাপ নজরে আসে তাঁদের। ড্রোন উড়িয়ে শুরু হয়েছিল বাঘিনির নির্দিষ্ট অবস্থান জানার চেষ্টা। মানবাজার-২ রেঞ্জের ঝাটিপাহাড়ির জঙ্গলে খোঁজ মেলেছিল এক বার। এলাকার দু’দিক জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা শুরু হয়। কিন্তু সে সব বাধা টপকে জ়িনতের গন্তব্য এখন বাঁকুড়ার জঙ্গল।