• কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি সফরে ৫ হাজার
    এই সময় | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, মালবাজার: বড়দিন থেকে নতুন বছর, ছুটির কয়েকটা দিনে উত্তরবঙ্গে আসার ঢল নামে পর্যটকদের। অনেকেই আগে থেকে পরিকল্পনা করতে পারেন না বলে ট্রেনের টিকিট পান না। তাঁদের বাসের ভরসায় থাকতে হয়। এই সুযোগে আঙুল ফুলে কলাগাছ বেসরকারি পরিবহণ সংস্থাগুলির। ফলে শিলিগুড়ির বাসভাড়া এখন কার্যত চোখ রাঙাচ্ছে উড়ানকেও।

    শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা বা কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি অসংখ্য যাত্রী এই সময়ে যাতায়াত করেন। এঁদের বড় অংশই পর্যটক। চার থেকে পাঁচ গুণেরও বেশি টাকা দিয়ে বাসের টিকিট কাটতে বাধ্য হন তাঁরা। মূলত ট্রেনের টিকিট না পেয়ে নাইট সুপার বাসগুলিতে সওয়ার হতে হয় যাত্রীদের। অনলাইনে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বাসগুলির টিকিট কাটা যায়। কোনও কোনও সময় উড়ানের কাছাকাছি চলে যাচ্ছে বাসের ভাড়া।

    চাহিদা অনুযায়ী বাসের টিকিটের দাম বাড়ানোর যে পদ্ধতি, তা মানছে না পরিবহণ সংস্থাগুলি। এমনই অভিযোগ সাধারণ যাত্রীদের। চাহিদা অনুযায়ী টিকিটের দাম বাড়ানোর যে নিয়ম, তাকে বলা হয় ‘ডায়ানামিক ফেয়ার’। নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে এই ভাড়া বৃদ্ধির অঙ্ক কষা হয়। উড়ানের টিকিটে ‘ডায়নামিক ফেয়ার’ কার্যকর করা হয়ে থাকে।

    ভারতীয় রেলও অনেক ক্ষেত্রে এখন ‘ডায়নামিক ফেয়ার’ পদ্ধতি টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে শুরু করেছে। এই পদ্ধতির ফলে যাঁরা অনেক আগে টিকিট কাটেন, তাঁরা তুলনামূলক কম দামে টিকিট পান। যাঁরা কাছাকাছি সময়ের টিকিট কাটেন, তাঁদের তত বেশি টাকা খরচ করতে হয়।

    এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের বাসিন্দা ফইয়াজ আহমেদের। এই ছুটিতে সস্ত্রীক ডুয়ার্স বেড়াতে এসেছেন তিনি। ট্রেনের টিকিট তৎকাল ব্যবস্থাতেও পাননি। বাসে আসার সিদ্ধান্ত নেন। বিভিন্ন সংস্থার বাসের টিকিট ঘেঁটেও কোনওটিতেই পাঁচ হাজার টাকার কম কোথাও পাননি। বাধ্য হয়ে ১০ হাজার টাকা খরচ করে শিলিগুড়ি পৌঁছন দু'জন।

    ফইয়াজ বলেন, ‘সাধারণ সময়ে স্লিপার সুবিধাযুক্ত বাসে বড় জোর দেড় হাজার টাকায় টিকিট মেলে, সেটাই পাঁচ ছাড়িয়ে ছ’হাজারও হয়ে যাচ্ছে।’ এই রুটের ভাড়া সাধারণ ভাবে থাকে সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে। দূরপাল্লার বাসের ভাড়া এর সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। উড়ানের ক্ষেত্রে দিনের দিন অথবা একদিন আগে টিকিট কাটলে অবশ্য ভাড়া দ্বিগুণ বা তিনগুণও হতে পারে।

    কিন্তু এই নিয়ম মানছে না বেসরকারি বাস সংস্থাগুলি। শিলিগুড়ি–কলকাতা রুটে বছরের বিশেষ সময়গুলিতে আগে থেকেই দাম বাড়িয়ে রেখে দিয়েছে তারা। বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে যে, জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি ১,১০০ থেকে ১,৫০০ টাকা দরে টিকিট মিললেও ২২ জানুয়ারি থেকে ছুটির চার-পাঁচদিন সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা ভাড়া চড়িয়ে রাখা হয়েছে। পরিবহণ সংস্থার অনুমোদন নিয়েই এই বাসগুলি রাস্তায় চলে। তা হলে ভাড়ার ক্ষেত্রে পরিবহণ দপ্তরের কোনও নিয়ন্ত্রণ কেন থাকবে না? এই প্রশ্ন তুলছেন যাত্রীরা।

  • Link to this news (এই সময়)