• প্রজাতন্ত্র দিবসে জাতীয় মঞ্চে নাটুয়া নৃত্য, এক যুগ পর দিল্লির রাজপথে দেখা যাবে পুরুলিয়ার লোকশিল্প...
    আজকাল | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • অরিন্দম মুখার্জি: আজ থেকে ১২ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৩ সালে ২৬শে জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে বাংলার ট্যাবলোতে প্রতিনিধিত্ব করেছিল পুরুলিয়ার ছৌ-নৃত্য দল। সকলকে ছাপিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে নিয়েছিল তাদের নৃত্য পরিবেশন। তারপরে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছিল ছৌ নৃত্যশিল্পীদের দল। জিতেছে বহু পুরস্কার। আগামী প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লির রাজপথে নৃত্য পরিবেশন করতে চলেছে পুরুলিয়ার লোকশিল্পীদের একটি দল। এবার পরিবেশন করা হবে নাটুয়া নৃত্য। পুরুলিয়া জেলার একটি অন্যতম লোকসংস্কৃতির অংশ এই নাটুয়া নৃত্য। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে ১০০ জনের একটি দল দিল্লির রাজপথে প্রজাতন্ত্র দিবসে পার্বতীর মিলন নৃত্য পরিবেশন করবেন। যা দেখবে গোটা দেশ এবং বিদেশের প্রতিনিধিরা। ভারত সরকারের সঙ্গীত অ্যাকাডেমির আমন্ত্রণে এই লোকশিল্পীর দল অংশগ্রহণ করতে চলেছে।  

    ধামসার তালে সুর মিলিয়ে বলরামপুরে বীরেন কালিন্দির তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে এই নাটুয়া নৃত্যের অনুশীলন। দিনরাত্রি ধরে কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে চলছে মহড়া। বীরেন বলেন, ''আমরা ১০ ডিসেম্বর ভারত সরকারের তরফ থেকে আমন্ত্রণ পাওয়ার পর হাতে অল্প সময় থাকায় বিভিন্ন স্থান থেকে শিল্পীদের জড়ো করে এই দল তৈরি করা একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছিল। সেই জন্য আমরা প্রত্যেককে এক ছাদের তলায় এনে বলরামপুর অঞ্চলে এই অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছি।''

    বীরেনের তত্ত্বাবধানে তিন মিনিট ধরে প্রাচীন এই নৃত্যকলা তুলে ধরা হবে ভারতের রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর সামনে। তাছাড়াও দেশ এবং বিদেশের বহু অতিথি উপস্থিত থাকবে প্রজাতন্ত্র দিবসে। তাঁরাও বাংলার এই প্রাচীন নৃত্যকলা উপভোগ করতে পারবেন। 

    ২০১৩ সালের লোকশিল্পী বিজয়কৃষ্ণ মহালি ছৌ পরিবেশন করেছিলেন রাজপথে। আগামী বছরও তাঁকে দেখা যাবে মঞ্চে। তিনি বলেন, ''খুবই আনন্দ পেয়েছি। এর আগে ছৌ পরিবেশন করে আমরা বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেছিলাম। প্রথম স্থান অধিকার করেছিলাম। আশা রাখছি ২০২৫-এও আমরা প্রথম স্থান পেয়ে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করতে পারব।'' 

    কথিত আছে নাটুয়ার উৎপত্তি নটরাজ থেকে হয়েছিল। শিব-দুর্গার বিয়ের সময় মহাদেবের দুই সঙ্গী নন্দী আর ভিরিঙ্গি এই নাটুয়া নৃত্য প্রথম তুলে ধরেন তাঁদের সামনে। নটরাজের নৃত্যে যে মুদ্রা ব্যবহার করা হয় তা এই নাটুয়া থেকে নেওয়া হয়েছে।  দীর্ঘ কয়েকশো বছর ধরে এই ঐতিহ্য বহন করে চলেছেন নাটুয়া শিল্পীরা। বলরামপুরের হরিরাম কালিন্দীর হাত ধরে পুরুলিয়াতে এই শিল্পের আবির্ভাব। তারই বংশধরেরা পরম্পরাগতভাবে এই শিল্পের ঐতিহ্যকে বহন করে চলেছেন। 
  • Link to this news (আজকাল)