• পুর এলাকায় জলের ঘাটতি খুঁজতে গিয়ে, হাতেনাতে অবৈধ জলের কারবার ধরলেন স্বয়ং পুরপ্রধান
    আজকাল | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • মিল্টন সেন,হুগলি: কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! নলবাহিত জল নাকি পৌঁছচ্ছে না একাধিক বাড়িতে। খোঁজ নিতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ পুরপ্রধানের। দেখা গেল পুরসভার জল চুরি করে ভরা হচ্ছে নামী কোম্পানির বোতলে। শহর ছেয়ে গেছে অবৈধ জলের কারবারে। শনিবার অবৈধ জলের কারবারিদের হাতেনাতে ধরলেন খোদ কোন্নগরের পুরপ্রধান নিজেই। কাউকে ছাড়া হবে না, পুলিশের কাছে অভিযোগ করার কথা জানালেন তিনি।

     

     

    পুরপ্রধান দেখলেন, নানারকমভাবে ব্যবসা চলছে। কেউ মাটির তলা থেকে সরাসরি জল তুলে নামী কোম্পানির বোতলে ভরে বিক্রি করছিলেন। কেউ আবার পুরসভার নলবাহিত জলকেই বোতলে বন্দি করে বিক্রি করছিলেন বাজারে। বাড়ি বাড়ি পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছনো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তার পরেও এভাবে পুরসভার নলবাহিত জল চুরি করে রমরমিয়ে অবৈধ জলের ব্যবসা, বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিন সরাসরি পুরপ্রধান স্বপন দাস পৌঁছলেন সেই অবৈধ জলের ব্যবসায়ীদের কাছে। হাতেনাতে ধরলেন সেই অবৈধ কারবারিদের। শহরের একাধিক জায়গা থাকে চলছিল এই অসাধু উপায়ে জল সংগ্রহ করে তা বিক্রি করার ব্যবসা। জমিয়ে করবার চালাচ্ছিলেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। এই খবর ছিল পুরসভার কাছে। এদিন সকালে খোদ পুরপ্রধান জল চুরি রুখতে কোন্নগর স্টেশন সংলগ্ন এলাকা আর এন টেগর রোডে পৌঁছে যান। সেখানে গিয়ে অবৈধভাবে জল কারবারীদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে এফ আই আর করা হবে বলে জানান।

     

     

    এদিন চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, শহরে বাড়িতে জল পৌঁছানোর জন্য একাধিক কাজ শুরু করেছে পুরসভা। তারপরেও একাধিক বাড়িতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পৌঁছচ্ছে না। সেই খোঁজ নিতে গিয়েই জানা যায়, এরকম অনেকে রয়েছেন যারা নিজেদের বাড়িতে বোরিং মেশিন বসিয়ে মাটির তলা থেকে অবৈধভাবে জল তুলে নিচ্ছেন। কোনও বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই তাঁরা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকে রয়েছেন যারা পুরসভার জলকেই সংরক্ষিত করে তা বোতলে ভরে বিক্রি করছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় তাঁর। স্বপনবাবু জানিয়েছেন, এদের কাউকে ছাড়া হবে না। জল নিয়ে ব্যবসা হবে আর শহরবাসী জল পাবে না। এটা চলতে পারে না। এক একদিনে প্রায় কুড়ি থেকে ত্রিশ হাজার লিটার জল চুরি হয়। তাছাড়া কোনওরকম বিশেষ প্রক্রিয়াকরণ ছাড়াই সেই জলকে বোতলে ভরে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। তাও আবার কম দামে। একদিকে সেই জল কতটা মানুষের শরীরের উপযোগী তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন পুরপ্রধান। জল ব্যবসায়ী অরুণ মণ্ডল বলেছেন, বছর চারেক আগে প্রায় চার লক্ষ টাকা খরচ করে তিনি এই জলের প্ল্যান্ট বসিয়েছিলেন বাড়িতে। মাটি থেকে জল উত্তোলন করে সেই জল বোতলে ভরে বাজারে পাঠানো হচ্ছিল। মাত্র ১০ টাকায় জল দেওয়া হচ্ছিল। কম টাকায় জল দেওয়ার কারণে তার জলের চাহিদাও বেশি। চেয়ারম্যান যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছন তখন টনক নড়ে তাদের। 
  • Link to this news (আজকাল)