এই সময়, সন্দেশখালি: এখন তাঁরা ভালো আছেন বলে নিজেরাই জানাচ্ছেন। কাল, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসবেন তাঁদের এলাকায়। সে জন্য তাঁরা খুশি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান, কথা বলতে চান এবং নিজেদের কোনও সমস্যা থাকলে সে কথা খোলাখুলি বলতে চান সন্দেশখালির সেই প্রতিবাদী মহিলারা।
যাঁরা বছর খানেক আগে শেখ শাহজাহান ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে, জমি দখল করার বিরুদ্ধে পথে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কাল মুখ্যমন্ত্রী সন্দেশখালিতে গিয়ে সভা করে সরকারি বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের কাগজ তুলে দেবেন ওই এলাকার সুবিধাপ্রাপকদের হাতে।
এ বছর ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির সরবেড়িয়া গ্রামে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা পরিষদ সদস্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের তৎকালীন কর্মাধ্যক্ষ, তৃণমূলের স্থানীয় নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডি–র অফিসাররা তল্লাশি অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হন। ওই ঘটনার পরেই সামনে আসে শাহজাহান এবং তাঁর সহকারী শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারদের কীর্তিকলাপের কথা।
মহিলাদের অসম্মানের বিভিন্ন ঘটনার কথা জানা যায়। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালি। শাহজাহান ও তাঁর লোকজনের গ্রেপ্তারির দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন, যার অগ্রভাগে ছিলেন মহিলারা। পরে অবশ্য শাহজাহান, উত্তম, শিবুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের বহিষ্কার করে শাসক দল। দখল হওয়া জমি গ্রামবাসীদের ফেরত দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে। সন্দেশখালির ঘটনার পর এ–ই প্রথম বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে যাচ্ছেন।
সন্দেশখালির সেই প্রতিবাদী মহিলারা কাল মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। সন্দেশখালির প্রতিবাদী সীমা দাস বলছেন, ‘এখন সন্দেশখালিতে শান্তি। ওরা (শাহজাহান ও তাঁর সঙ্গীরা) জেলে যাওয়ায় আমরা খুব ভালো আছি। দিদিকে তখন আসার জন্য আমরা বার বার বলেছিলাম। দিদি তখন আসেননি। এখন তিনি আসছেন, আমাদের খুব ভালো লাগছে।’ সীমার সংযোজন, ‘দিদি যদি তখনই আসতেন, তা হলে সন্দেশখালিতে এত কিছু হতো না।’
আর এক প্রতিবাদী চম্পা সর্দারের বক্তব্য, ‘নেতারা আমাদের জমি কেড়ে নিয়েছিল। সে জন্য তখন আমরা আন্দোলন করেছিলাম। জমি ফেরত পেয়ে এখন আমরা শান্তিতে আছি। আমরা প্রথম থেকেই চেয়েছিলাম, মুখ্যমন্ত্রী সন্দেশখালিতে আসুন, আমাদের দেখুন। তখন তিনি না–এলেও এখন আসছেন। দিদির সঙ্গে আমরা কথা বলার চেষ্টা করব। আমাদের সুবিধে–অসুবিধের কথা তাঁকে বলতে চাই।’ রিনা পাত্রের কথায়, ‘যাদের বিরুদ্ধে আমরা রাস্তায় নেমেছিলাম, তারা এখন জেলে। এখন আমরা শান্তিতে আছি। মুখ্যমন্ত্রী আসছেন, আমরা খুশি।’
কাল মুখ্যমন্ত্রীর সভা ঘিরে সন্দেশখালিতে পুলিশ–প্রশাসনের তৎপরতা এখন তুঙ্গে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সভা যেখানে হবে, সন্দেশখালির সেই ঋষি অরবিন্দ মিশন মাঠ শনিবার পরিদর্শন করেন ডিআইজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী, বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার হোসেন মেহেদি রহমান এবং পুলিশ–প্রশাসনের অন্য আধিকারিকরা।