• বর্ষার আগে ফের রিজার্ভার পরিষ্কার, জল সঙ্কটের আশঙ্কা
    এই সময় | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, শিলিগুড়ি: সমস্যা এখনও মেটেনি। এরই মাঝে আগামী এপ্রিল–মে মাস নাগাদ সঙ্কটের ইঙ্গিত দিয়েছেন শিলিগুড়ি মেয়র গৌতম দেব। বর্ষার আগে শিলিগুড়িতে ফের পানীয় জলের সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তখনও পানীয় জলের দ্বিতীয় রিজার্ভারের পলি পরিষ্কার করার জন্য শহরে চাহিদার তুলনায় অর্ধেক জল মিলবে। আর এই পলি পরিষ্কারের কাজ করা হবে বর্ষার আগে।

    বর্তমানে শহরে যে জল–সঙ্কট দেখা দিয়েছে তার পরিস্থিতি জানতে শনিবার মেয়র পারিষদ, কাউন্সিলার, টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের নিয়ে বৈঠকও করেন গৌতম। কোথায়, কোথায় জলের ট্যাঙ্কার গিয়েছে, কোথায় বেশি সমস্যা হচ্ছে, সেই সমস্ত বিষয়ে খোঁজ নেন তিনি। মেয়র বলেন, ‘দ্বিতীয় জলের রিজার্ভার টাও তো পরিষ্কার করতে হবে। একবারেই যদি দু’টো বন্ধ রেখে কাজ করা হয় তাহলে তো শহরের জল মিলবে না। মানুষকে তো পরিষেবাটা আমাদের দিতে হবে। দ্বিতীয় রিজার্ভারটি পরবর্তী ধাপে বর্ষার আগেই সাফাই করা হবে।’

    শিলিগুড়ি পুরনিগমের বিরোধী দলনেতা অমিত জনের বক্তব্য, ‘এই বোর্ড যে সামান্য পরিষেবা দিতেও ব্যর্থ তা এই ঘটনা থেকেই স্পষ্ট। তৃণমূলের ওপরে মানুষ আস্থা হারিয়েছে। আগেও তো অন্য পুরবোর্ড ছিল। কিন্তু এ রকম সমস্যা হয়নি। এরা কী করতে চাইছে সেটা আমরাও জানি না।’ তিস্তায় সেচ বাঁধ মেরামতের জন্য চলতি বছরে প্রায় এক মাস শিলিগুড়ি শহরে পানীয় জল পরিষেবা বন্ধ ছিল। ওই সময়ে পানীয় জলের সঙ্কট মেটাতে জলের পাউচ তৈরির দু’টি চলমান ইউনিট নিয়ে আসা হয়েছিল শিলিগুড়িতে। এরপর কিছুদিন আগের মতো পরিস্থিতি থাকলেও বৃহস্পতিবার থেকে ফের শহরে পানীয় জলের সঙ্কট তৈরি হয়েছে।

    ফুলবাড়ি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে থাকা জলের রিজার্ভার দু’টি ১২ বছর ধরে পরিষ্কার করা হয়নি। এর জেরে পলি জমতে জমতে রিজার্ভারের জল তোলার যন্ত্রাংশে সমস্যা দেখা দিতে শুরু করেছে। সেই কারণে গত বৃহস্পতিবার থেকে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর ফুলবাড়ির ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টে একটি রিজার্ভারের পলি পরিষ্কার এবং যন্ত্রাংশ মেরামতের কাজ শুরু করে। এমনিতেই শিলিগুড়ি শহরে ৭২ মিলিয়ন লিটার পানীয় জলের চাহিদা থাকলেও ৫৫ মিলিয়ন লিটার জল পাওয়া যায়।

    সেই জায়গায় রিজার্ভার বন্ধ থাকায় প্রতিদিন মাত্র ২৭ মিলিয়ন লিটার পানীয় জল পাওয়া যাচ্ছে। ফলে শহর জুড়ে তীব্র জল সঙ্কট তৈরি হয়েছে। শহরের এমন একাধিক জায়গায় রয়েছে, কুয়োর জল আয়রন যুক্ত হওয়ায় পুরনিগমের সাপ্লাইয়ের জলেই ভরসা। ওই এলাকার মানুষদের সমস্যা মেটাতে শিলিগুড়ি পুরনিগম জলের ট্যাঙ্কার পাঠাচ্ছে।

    কিন্তু এর পরেও যে জলের সঙ্কট রয়েছে তা এ দিন ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে বসে টের পেয়েছেন গৌতম। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে তাঁর কাছে ফোন এসেছে। পুর নিগমের ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের দশরথপল্লির বাসিন্দা সুদীপ্ত জানার বক্তব্য, ‘আমাদের ওয়ার্ডে দু’টো পাড়ায় গত আট মাস ধরে জল আসে না। পাশের পাড়া থেকে জল আনতাম। এখন সেখানেও সমস্যা হচ্ছে। বাধ্য হয়ে তাই জল কিনে খাচ্ছি।’

  • Link to this news (এই সময়)