হার্টের সমস্যা থাকায় বেশিদূর ছুটতে পারেনি অসুস্থ নেকড়ে
বর্তমান | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: হার্টের অসুখ থাকায় বেশিদূর ছুটতে পারেনি। মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিল নেকড়ে। তারপরই উন্মত্ত জনতা তার মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করে। তাতেই আউশগ্রামের দেবশালার নেকড়েটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এডিএফও সৌগত মুখোপাধ্যায় বলেন, সাধারণত এই ধরনের নেকড়ে মানুষের কাছে থাকতে পছন্দ করে না। লোকালয় থেকে দূরের ঝোপঝাড় তাদের প্রিয় জায়গা। নেকড়েটি র্যাবিশ আক্রান্ত ছিল। অসুস্থ থাকার কারণেই সে লোকালয়ে এসে কামড়াতে শুরু করে। তবে এই পশুটিকে এভাবে মাথায় আঘাত করে মেরে ফেলা ঠিক হয়নি। বনদপ্তর খাঁচা পেতেছিল। সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এভাবে আইন হাতে তুলে নিলে প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। লোকালয়ে কোনও বন্য পশু ঢুকলে এলাকার বাসিন্দারা বনদপ্তরে যোগাযোগ করতে পারেন।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আউশগ্রামের জঙ্গলে বিভিন্ন ধরনের প্রাণী রয়েছে। খাদ্যের অভাবে সেগুলি মাঝেমধ্যেই বেরিয়ে আসে। তাদের পিটিয়ে না মেরে বনদপ্তরকে খবর দেওয়ার জন্য আধিকারিকরা সচেতনতামূলক প্রচার করছেন। রাতের দিকেও এলাকায় টহল চলছে। সচেতনতামূলক প্রচারের পরও কেউ প্রাণীদের উপর অক্রমণ করলে পুলিস গ্রেপ্তার করবে। আউশগ্রামের জঙ্গলে বহুদিন ধরেই নেকড়ে রয়েছে। সেগুলি কখনোই লোকালয়ে আসে না। কিন্তু কিছু প্রাণী খাবারের টানে বেরিয়ে আসছে। সেগুলিকে মেরে ফেলা হলে সমাজেরই ক্ষতি হবে। ওই নেকড়েটি দেবশালা পঞ্চায়েত এলাকার একটি গ্রামে শুক্রবার সকালে আচমকাই চলে আসে। সামনে পাওয়া ২০জনকে আক্রমণ করে। তারপরই গ্রামবাসীরা প্রাণীটিকে ধাওয়া করতে থাকে। কিছুটা ছুটে যাওয়ার পরই সে পড়ে যায়। গ্রামের লোকজন লাঠি, বাঁশ হাতে সেটিকে ধাওয়া করছিল। সেটি পড়ে যাওয়ার পরই মাথায় আঘাত করা হয়। বাইরে থেকে তা বোঝা যাচ্ছিল না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরই বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। এরপরই বনদপ্তর ওই এলাকায় লাগাতার প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পুলিসও ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছে। গ্রামবাসীরা প্রথম দিন দাবি করেছিলেন, প্রাণীটিকে তারা তাড়া করে। কিন্তু পিটিয়ে মারেনি। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরই পর্দা ফাঁস হয়ে গিয়েছে। তবে হার্টের অসুখ না থাকলে সহজে নেকড়েটির নাগাল পাওয়া যেত না বলে আধিকারিকদের দাবি।