সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: বাঘ ও হাতি নিয়ে ত্রস্ত বনদপ্তর। পুরুলিয়া থেকে বাঘিনি জিনাত ঢুকেছে বাঁকুড়ার রানিবাঁধের জঙ্গলে। সেই সময়ই জেলার অন্যপ্রান্তে বিষ্ণুপুরের বাঁকাদহর জঙ্গলে শনিবার ভোরে একটি দলছুট হাতি ঢুকেছে। তা নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দলছুট হাতি একা থাকার জন্য দলের হাতির চেয়ে বেশি ক্ষিপ্ত থাকে। সেইজন্য বনদপ্তরের তরফে স্থানীয় বাসিন্দাদের ইতিমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে।
বনদপ্তরের বাঁকাদহের রেঞ্জার তপোব্রত রায় বলেন, এদিন ভোরে গড়বেতা এলাকার জঙ্গল থেকে একটি দলছুট বুনো হাতি এলাকায় ঢুকেছে। দীর্ঘদিন একা থাকার কারণে হাতিটি ক্ষিপ্ত রয়েছে। সেই জন্য এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে। বর্তমানে ওই হাতিটি উপরশোল বিটের লায়েকডাঙা এলাকার জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দল হাতির একটি নির্দিষ্ট গতিবিধি থাকে। তাদের উপর নজরদারি চালাতে বনকর্মীদের সুবিধা হয়। তাঁরা দলের উপর বিশেষ নজরদারি চালান। ফসলের ক্ষয়ক্ষতি করলেও সাধারণ মানুষকে খুব একটা আক্রমণ করে না। কিছুদিন আগেই ৬২টি বুনো হাতির একটি দল জয়পুর, সোনামুখী হয়ে বড়জোড়ার জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে। তারা আলু সহ অন্যান্য সব্জি নষ্ট করেছে। কিন্তু, প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। জানা গিয়েছে, কোনও সময় চিকিৎসার প্রয়োজনে অসুস্থ হাতির উপর মানুষের হাতের স্পর্শ পেলে সেই হাতিকে আর দলে ফেরানো হয় না। এছাড়াও কখনও দু’টি দলের মধ্যে লড়াইয়ে হেরে গেলে সেই দলের সর্দারকে একঘরে করে দেওয়া হয়। এভাবেই দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দলছুট ওই হাতি ইচ্ছেমতো এদিক ওদিক ঘোরাফেরা করে। তার গতিবিধি সম্পর্কে আগাম বোঝা মুশকিল হয়। খাবারের সন্ধানে কখনও লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। কখনও রাস্তার ধারে ঝোপের আড়ালে থাকে। দীর্ঘদিন একা একা থাকতে থাকতে ওই হাতিটি ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। মানুষ দেখলে আক্রমণ করে। ওই সময় সামনে পড়লে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। জেলায় হাতির হানায় সিংহভাগ প্রাণহানির ঘটনা দলছুটের আক্রমণের জেরে ঘটেছে। তাই শনিবার ভোরে বাঁকাদহ রেঞ্জে উপরশোল বিট এলাকায় একটি দলছুট হাতি ঢুকে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। বনদপ্তরের তরফে ওই এলাকায় জঙ্গলে কাঠ অথবা পাতা কুড়ানো নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। -নিজস্ব চিত্র