সংবাদদাতা, ইসলামপুর: কে আগে যাবে, তা নিয়ে দুই বেসরকারি বাসের রেষারেষি। বাকবিতন্ডার পর বাসের স্টিয়ারিং ধরে টান দিতেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। চাপা পড়ে মৃত্যু হল শিশুকন্যা ও যুবকের। জখম হয়েছেন ১৪ জন। শনিবার বিকেলে ইসলামপুর বাস টার্মিনাসের সামান্য দূরে আইটিএস মোড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। প্রতিবাদে নিহত শিশুর পরিবার দীর্ঘ সময় শহরের মূল সড়ক অবরোধ করে। সন্ধ্যার দিকে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত সোমা মণ্ডল (৯) ইসলামপুরের নেতাজিপল্লি মাঠপাড়ার বাসিন্দা। শম্ভু বিশ্বাস (১৮) ইসলামপুরের নন্দঝাড় এলাকায় থাকতেন।
ইসলামপুর বাস অ্যাসোসিয়েশনের চেন অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি বাস শিলিগুড়ি থেকে রায়গঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। তারা রেষারেষি করে একই সময়ে ইসলামপুর বাস টার্মিনাসের সামনে দাঁড়ায়। সেখানে দুই বাসের কর্মীদের মধ্যে বচসার পর একটি রায়গঞ্জের দিকে রওনা দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বচসার সময় অন্য একটি বাসের কর্মী চালকের জানালা দিয়ে স্টিয়ারিং ধরে টান দেন। এতে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাঁদিকে যাত্রী প্রতীক্ষালয় এবং পাশের একটি বাড়ির বাউন্ডারি ওয়ালে ধাক্কা মারে। প্রতীক্ষালয়ে অপেক্ষারতরা সকলেই জখম হয়েছেন। এই সময়েই সোমা ও শম্ভুর ধাক্কা লেগে মৃত্যু হয়।
ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল। জখম ১৪ জনের চিকিৎসা চলছে। অতিরিক্ত পুলিস সুপার ডেন্ডুপ শেরপা বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে রেষারেষিতে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। দু’টি বাস আটক করা হয়েছে। আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মৃত সোমার বাবা প্রকাশ দাস এবং মা প্রতিমা মণ্ডল মেয়ের শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, চোপড়া থানা এলাকায় দিদিমার কাছে বেড়াতে গিয়েছিল সোমা। এদিন মায়ের সঙ্গে বাসে ফিরে বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তার।
মৃত শম্ভু বিশ্বাসের কাকা ভরত বিশ্বাস বলেন, শম্ভু একমাত্র ছেলে। এক বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে এসে বাড়ি ফেরার জন্য টোটোয় বসেছিল। তখনই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
ইসলামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, রেষারেষির জন্য দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব বন্ধ করতে চেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করব।
ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন ইসলামপুর মহকুমা শাসক প্রিয়া যাদব। তিনি উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। নিজস্ব চিত্র