• ধস এবং তিস্তার ছোবলে বিধ্বস্ত ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের দায়িত্ব নিল কেন্দ্রীয় সংস্থা
    বর্তমান | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে ধস ও তিস্তা নদীর ছোবলে বিধ্বস্ত কালিম্পংয়ের লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের দায়িত্ব নিল ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (এনএইচআইডিসিএল)। নির্দেশ জারির প্রায় দু’মাস পর তারা পূর্তদপ্তরের কাছ থেকে রাস্তাটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিল। শীঘ্রই ড্রোন উড়িয়ে রাস্তাটি নিয়ে তারা সমীক্ষা করবে। এজন্য তারা শিলিগুড়িতে একটি অফিসও চালু করেছে।


    কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালা সুব্রহ্মণ্যম টি বলেন, কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ এবং হাইওয়ে মন্ত্রকের নির্দেশ অনুসারে এনএইচআইডিসিএলকে রাস্তাটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা রাস্তা সংস্কার করতে ড্রোনের মাধ্যমে সমীক্ষা করবে। এব্যাপারে তাদেরকে সবরকমভাবে সহযোগিতা করা হবে।


    দীর্ঘদিন ধরে ধস ও নদী ভাঙনে বিধ্বস্ত কালিম্পংয়ের লাইফ লাইন। গত বর্ষার মরশুমে দফা দফায় বন্ধ ছিল ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। কখনও সাত দিন, কখনও ১৫ দিন, এমনকী এক মাসেরও বেশি সময় বন্ধ ছিল রাস্তাটি। গত বছর সিকিমে হ্রদ বিপর্যয়ের পরও রাস্তাটি বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। ফলে শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং ও সিকিমের সঙ্গে ঘুরপথে যোগাযোগ করতে হয়। এতে বিপর্যস্ত হয় পাহাড়ের গ্রামীণ অর্থনীতি, পর্যটন ব্যবসা। এজন্যই রাস্তাটির কালিম্পংয়ের অংশ নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি ওঠে। সেইমতো কেন্দ্রীয় সরকার রাস্তাটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব এনএইচআইডিসিএলের হাতে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। গত ২৯ অক্টোবর এব্যাপারে গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ এবং হাইওয়ে মন্ত্রক।


    প্রায় দু’মাস পর ২৬ ডিসেম্বর সেই নির্দেশিকা কার্যকর হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের সেভকের করনেশন সেতু থেকে সিকিম সীমানা সংলগ্ন রংপো পর্যন্ত অংশের দৈর্ঘ্য ৫২.১০ কিলোমিটার।  দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট অংশের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে রাজ্য পূর্তদপ্তরের হাইওয়ে ডিভিশন-১০ বিভাগ। ইতিমধ্যে তারা ভাঙান কবলিত রাস্তাটির ৪০টি অংশ চিহ্নিত করেছে। সেগুলির মধ্যে বিরিকধারা, সেলফিধারা, ২৯ মাইল, চিত্রে, শ্বেতীঝোরা উল্লেখযোগ্য।


    এর বাইরে ধস প্রবণ অর্থাৎ পাহাড়ের গা থেকে মাটি, পাথর নিয়মিত রাস্তার উপর পড়ে এমন আরও ২৫টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়। ইতিমধ্যে ধস ও নদী ভাঙন মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর খরচ করেছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। এবার তারা রাস্তাটির দায়িত্ব এনএইচআইডিসিএলকে দিয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা শিলিগুড়িতে একটি অফিস চালু করেছে। কালিম্পং শহরে একটি সেকশন অফিস চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে।          


    প্রসঙ্গত, শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং হয়ে সিকিমের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই জাতীয় সড়ক। এটি কালিম্পং ও সিকিমের লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত। রাস্তাটির একপাশে তিস্তা। আর একপাশে পাহাড়। প্রশাসন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য সমীক্ষা করে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে পেশ করে রাজ্য। সেই প্রস্তাব অনুমোদন দেয়নি কেন্দ্র। এখন কেন্দ্রীয় সংস্থা কী করে সেটাই দেখার।
  • Link to this news (বর্তমান)