১ হাজার কোটির ক্লাবে মমতার প্রকল্প, বেকার যুবকদের পাশে রাজ্য
বর্তমান | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রীতেশ বসু, কলকাতা: প্রকল্পের বয়স মাত্র এক বছর ন’মাস। এই ক’দিনেই সাফল্যের নয়া নজির গড়ল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত ‘ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড’ প্রকল্প। বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে গৃহীত এই প্রকল্প আর কয়েকদিনের মধ্যে ‘হাজার কোটির ক্লাবে’ ঢুকতে চলেছে। প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন হয়েছে। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) শেষ হয়েছে এক মাস ধরে রাজ্যের প্রতি ব্লকে চলা ‘শিল্পের সমাধানে’ শিবির। সেখানে আরও দেড় লক্ষ তরুণ-তরুণী ক্ষুদ্রশিল্প দপ্তরের আওতাধীন এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাই প্রশাসনের আশা, জানুয়ারির মধ্যেই সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের অঙ্ক এক হাজার কোটির গণ্ডি ছাড়াবে। প্রসঙ্গত, ‘ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড’-এর মাধ্যমে রাজ্যের ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সিরা সহজ শর্তে ভর্তুকিযুক্ত এবং জামানতমুক্ত ঋণ পেয়ে থাকেন। সেই টাকায় তাঁরা আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হওয়ার জন্য শুরু করেন পথ চলা।
২০২৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে প্রকল্পটি চালু হয়েছিল। কোনও রাজ্য সরকারের চালু করা এই ধরনের প্রকল্প এত কম সময়ের মধ্যে ‘হাজার কোটির ক্লাবে’ ঢোকার রেকর্ড নেই বললেই চলে। তামিলনাড়ু সরকার যুবক-যুবতীদের ব্যবসা শুরু করার জন্য গত কয়েক বছর ধরে ‘নিউ এন্টারপ্রেনর কাম এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট স্কিম’ (নিডস) সহ মোট পাঁচটি প্রকল্প চালু করেছে। সেই পাঁচটি প্রকল্পের মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত ২,৯৯৪ কোটি টাকার ঋণ প্রদান হয়েছে। ওড়িশা সরকার চলতি বছরের গোড়ায় চালু করেছে ‘স্বতন্ত্র যুবা উদ্যমী’ প্রকল্প। কিন্তু সেখানে ক্ষমতার পালাবদলের পর আর গতি পায়নি প্রকল্পটি। বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, কেন্দ্রের এবং তথাকথিত কয়েকটি ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্যেরও এই ধরনের প্রকল্প রয়েছে। যেমন, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা’র মাধ্যমে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যায়। সেই জায়গায় বাংলার ‘ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড’-এ ঋণের ঊর্ধ্বসীমা পাঁচ লক্ষ হলেও তা পাওয়া যায় কোনও জামানত ছাড়াই। নেই কোনও ‘অপ্রাসঙ্গিক’ শর্তও। সেই কারণেই হবু ব্যবসায়ী বা শিল্পোদ্যোগীরা ‘ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড’-এই আস্থা রাখছেন বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
২ থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘শিল্পের সমাধানে’ শিবির থেকে যে দেড় লক্ষ মানুষ ‘ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড’-এর আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ৪০ হাজার আবেদন ইতিমধ্যে জমা পড়ে গিয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আবেদনগুলি যাচাইয়ের কাজও শুরু করে দিয়েছে। কারণ, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ঋণ প্রদান সম্পন্ন করার টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয়েছে ব্যাঙ্কগুলিকে। এখনও পর্যন্ত মোট ৩২ হাজার আবেদনকারী এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। ইতিমধ্যে ১৬টি জেলায় ক্ষুদ্র শিল্পের ‘সিনার্জি’ শেষ হয়েছে। এই অনুষ্ঠান থেকেই ১০ হাজার কোটি টাকার ক্ষুদ্র শিল্পের ক্রেডিট লিংকেজ বা ঋণ প্রদান সম্পূর্ণ হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।