• ডিসেম্বরের শেষেও রোদে পুড়ছে গা, রাজ্য থেকে ঠান্ডা যেন উধাও
    বর্তমান | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গত কয়েকদিনের তুলনায় শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শনিবার কিছুটা নেমেছিল। তবে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ না নামায় গরম কামড় বসাতে ছাড়েনি। সকালের পরই শরীরে ঘাম। কড়া রোদে প্রায় চাঁদি ফাটার জোগাড়। শনিবার শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬.৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড ছিল। যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি। ভোরের দিকে অবশ্য কম ছিল। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তখনই মাপা হয়। এদিন তা ছিল ১৫.৮ ডিগ্রি। তবে সেটিও স্বাভাবিকের থেকে দু’ডিগ্রি বেশি। আর দিনভর প্রখর রোদ। সে কারণে গায়ে গরম জামা চাপানোর প্রয়োজনই বোধ হল না কলকাতায়। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, এ বছর শীত-পরিস্থিতি মোটামুটি এমনই থাকবে। নতুন বছর পাল্টাবে অবস্থা। তখন খানিক ঠান্ডা পড়ার সম্ভাবনা।


    শহর থেকে মফস্সল, চারদিকজুড়ে এখন আনন্দের মেজাজ। সকাল হলেই গ্রামগঞ্জ থেকে ট্রেনে চেপে শহরে ঘুরতে চলে আসছেন অনেকে। সেরকমই উলুবেড়িয়া থেকে শনিবার কলকাতায় এসেছিলেন চন্দ্রিমা পাল। তিনি বললেন, ‘এ বছর কম্বল বের করতেই হল না। কোথায় শীত? এখনই তো ঘেমে চান করে যাচ্ছি।’ বন্ধুদের সঙ্গে ময়দান, ভিক্টোরিয়ায় হাঁটার পরিকল্পনা করেছিলেন কলেজ পড়ুয়া শৌভিক, সুতপারা। রবীন্দ্রসদন মেট্রো থেকে ভিক্টোরিয়া পর্যন্ত হেঁটে যেতেই তাঁরা ক্লান্ত। শৌভিক বললেন, ‘হেঁটে ঘোরার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু যা গরম, সম্ভব নয়। কোনও ক্যাফেতে গিয়েই বসতে হবে।’ এদিকে নতুন শীত পোশাক কিনেও গায়ে দিতে পারেননি বাগনানের শ্রীমাল্য মৈত্র। বললেন, ‘এবার থেকে গরম জামা কেনাই ছেড়ে দেব।’ 


    এই অকাল গ্রীষ্মে খবর এল, দমদম, উলুবেড়িয়া, ক্যানিং, ডায়মন্ডহারবার, বারাকপুরে ১৪ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে তাপমাত্রা ওঠানামা করেছে। সল্টলেকে তুলনায় গরম ছিল বেশি। সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭.৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। শহরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গরম বেড়েছে জেলাতেও। তবে পুরুলিয়াতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। কল্যাণী আর শ্রীনিকেতনেও ১২’র ঘরে ঘোরাফেরা করেছে তা। বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, বর্ধমান, ঝাড়গ্রামে ১৩ থেকে ১৫ ডিগ্রির মধ্যে ছিল তাপমাত্রা। ডিসেম্বরের শেষে এমন ঘাম দেখে চিন্তার ভাঁজ বিশেষজ্ঞদের কপালে। এর জন্য তাঁরা বিশ্ব উষ্ণায়নকে দায়ি করছেন। হলদিয়াতে এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬.৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী বেশ কয়েকটি এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৩০ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল।


    তবে গরম সঙ্গে নিয়েই পিকনিক কিংবা পরিবার-পরিজনদের নিয়ে ঘোরাঘুরি চলেছে দিনভর। রাজারহাটের তপতী মিত্র শনিবার বিকেলে নন্দনে সিনেমা দেখতে এসেছিলেন। বললেন, ‘এখন আর শীতকাল কোথায়? শীত পড়েছে বলে যে বেরব তেমনটা হওয়ার নয়। ছুটি পাওয়া যায় তাই বেরই।’ আর বাকি সবার বক্তব্য, ঠান্ডার সুখ পেতে গেলে একমাত্র জায়গা এখন দার্জিলিং। সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬.৪ আর কোচবিহারে ৯.৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
  • Link to this news (বর্তমান)