• দেনা শোধে ফ্ল্যাট বিক্রি স্বামীর, তাই ছেলেকে মেরে আত্মঘাতী! শিবপুর রহস্য
    এই সময় | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, হাওড়া: মায়ের চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা ধার হয়ে গিয়েছিল। সেই টাকা শোধ করতে কয়েকদিন আগে নিজেদের ফ্ল্যাটটি বিক্রি করে দিয়েছিলেন হাওড়া সিটি পুলিশের কর্মী প্রদীপ ঝা। এই নিয়েই স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে তাঁর ঝামেলা বাড়ছিল। যা মেনে নিতে পারেননি তাঁর স্ত্রী।

    মাথার উপর ছাদ চলে যাওয়ার অবসাদেই শিবপুরের ব্যাতাইতলার ফ্ল্যাটে দুই ছেলেকে মারার চেষ্টা করে আত্মহত্যা করেন গৃহবধূ রুবি ঝা (২৭)। ঘটনায় রুবির বড় ছেলে ১১ বছরের চিরাগের শুক্রবারই মৃত্যু হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছোট ছেলে চার বছরের বঙ্কু।

    শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্যাতাইতলার একটি আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় রুবির মৃতদেহ। তাঁর দুই ছেলে চিরাগ ও বঙ্কুকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে শিবপুর থানার পুলিশ। তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা রুবি ও চিরাগকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ছোট ছেলেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর পরেই তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, আদতে স্বামী–স্ত্রী শান্ত স্বভাবের হলেও কয়েকদিন যাবৎ এই বাড়ি বিক্রি নিয়েই অশান্তি চলছিল তাঁদের মধ্যে।

    প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রদীপ আগে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। তাঁর বাবা হাওড়া সিটি পুলিশে চাকরি করতেন। কর্মরত অবস্থায় বাবার মৃত্যুতে সেই চাকরিটি কিছুদিন আগে পান প্রদীপ। স্ত্রী ও ছেলেকে হারিয়ে মাথার উপরে আকাশ ভেঙে পড়েছে প্রদীপের।

    কাঁদতে কাঁদতে এ দিন তিনি বলেন, ‘বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করে কোনও রকমে সংসার চলত। পরে পুলিশে চাকরি পেলেও মায়ের চিকিৎসার জন্য অনেক খরচ হয়ে গিয়েছে। বাজারে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা দেনা। সেই টাকা শোধ করার জন্য স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেই ফ্ল্যাট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা মেনে নিতে পারেনি রুবির বাপের বাড়ির লোকজন।’

    প্রদীপ জানান, ফ্ল্যাট বিক্রি করে রেজিস্ট্রি হয়ে গিয়েছিল, তাই তাঁর আর কিছু করার ছিল না। তিনি বলেন, ‘শাশুড়ির কাছে অন্য ফ্ল্যাট কেনার টাকা চাইলে রুবিকে অপমান করে ওর বাপের বাড়ির লোকজন। এই নিয়ে অবসাদে ভুগছিল রুবি। কিন্তু তার জন্য এত বড় ঘটনা ঘটাবে তা স্বপ্নেও ভাবিনি।’

  • Link to this news (এই সময়)