এই সময়, নামখানা: কাকদ্বীপের হারউড পয়েন্টের পাশাপাশি সাগরমেলার অন্যতম রুট নামখানা পয়েন্ট। শিয়ালদহ থেকে সরাসরি ট্রেনে চেপে পুণ্যার্থীরা নামখানা স্টেশনে নামে। পাশাপাশি সরাসরি বাস এবং ছোট গাড়ি নিয়েও হাজার হাজার পুণ্যার্থী নামখানার জেটিঘাটগুলিতে চলে আসেন। তার পর হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীতে লঞ্চে চেপে মুড়িগঙ্গা নদীর উপর দিয়ে বেণুবন এবং চেমাগুড়ি হয়ে সাগরমেলায় পৌঁছতে হয়।
হাতানিয়া–দোয়ানিয়া নদীপথ আন্তর্জাতিক জলপথ। এই পথে প্রতিদিন অসংখ্য বাংলাদেশি বার্জ চলাচল করে। ফলে বাংলাদেশের অশান্তির প্রেক্ষিতে এই নদীপথের গুরুত্ব বেড়েছে। সে জন্য এ বার নামখানা পয়েন্টে নিরাপত্তা পরিকাঠামো কয়েকগুণ বাড়ানো হচ্ছে। এই পয়েন্টে ড্রপগেটের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি বাড়ছে ওয়াচ টাওয়ার, সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যা। নাশকতা রুখতে থাকবে পুলিশের প্রশিক্ষিত কুকুর।
শুক্রবার সুন্দরবন পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৌস্তভদীপ্ত আচার্য একটি বৈঠক করেন। সেই বৈঠক থেকে পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা ও স্পট ভিজিট হয়। পরে নামখানা থানার ওসি বিভাস সরকার–সহ পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে নিয়ে হতানিয়া–দোয়ানিয়া নদীর দু’পাশে নামখানা জেটিঘাট এলাকা ঘুরে দেখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
পরে তিনি বলেন, ‘নামখানায় বেশ কিছু স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্টে ড্রপগেট তৈরি করা হচ্ছে। ওয়াচ টাওয়ার এবং পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্ট বুথ ও পুলিশ কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হচ্ছে। মেলার নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ড্রোন ওড়ানোর পাশাপাশি স্নিফার ডগ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ প্রচুর সাদা পোশাকের পুলিশ বাহিনী মোতায়েন রাখা হবে মেলায়।
সাগর মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তীর্থযাত্রীদের ২ ও ৩ নম্বর স্নানঘাট দিয়ে নামতে দেওয়া হবে না। এই দু’টি স্নানঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ১ ও ৬ নম্বর স্নানঘাটের পাশে নতুন স্নানঘাট গড়ে তোলার কাজ চালানো হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। বাংলাদেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে মেলায় আসা তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা অক্ষুণ্ণ রাখতে সাগর স্নানে এ বার বিশেষ পন্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
গঙ্গাসাগর বাসস্ট্যান্ড থেকে তীর্থযাত্রীরা নামার পর ৭০ শতাংশকে পাঠানো হবে এক নম্বর স্নানঘাটের দিকে। বাকি ৩০ শতাংশ তীর্থযাত্রীকে তিন, চার, পাঁচ, ছয় নম্বর ঘাটের দিকে পাঠানো হবে।
লাগাতার ভাঙনে তছনছ হয়ে গিয়েছে ২ থেকে ৫ নম্বর স্নানঘাট বরাবর উপকূল। ভাঙন আটকাতে সেচ দপ্তরের তরফে নেওয়া একাধিক ব্যবস্থা কার্যত ব্যর্থ হয়েছে বলে বারে বারে অভিযোগ উঠেছে। ফলে মেলার আগে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সমুদ্র উপকূলের বেহাল বাঁধে নতুন করে মাটি ফেলে মেরামতের কাজ চালাচ্ছে সেচ দপ্তর। ভাঙনের জেরে মেলার মাঠ ছোট হয়ে আসায় পুলিশের কন্ট্রোলরুম–সহ বেশ কিছু পরিকাঠামোকে অন্যত্র সরানো হবে।