একে এবিটিতে রক্ষা নেই, দোসর কেএলও! নিজেদের প্রতিষ্ঠা দিবসে বিবৃতি জারি করে ফের মাথাচাড়া দিল কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন। দলের কোচ ন্যাশনালিজম শাখার তরফে জারি করা ওই বক্তব্য উদ্বেগ বাড়িয়েছে গোয়েন্দাদের। ১৯৯৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর কেএনও–র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াংচু কোচ।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের বক্তব্য, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এবিটি–জেএমবি–কেএলও সহ জঙ্গি সংগঠনগুলি জোট বাঁধতে পারে বলে আগেই আভাস পাওয়া গিয়েছিল। ফলে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতেই হচ্ছে। গোয়েন্দাদের অবশ্য এই চিন্তার পিছনে যথেষ্ট কারণও রয়েছে। কারণ, ইতিমধ্যেই জেএমবির সঙ্গে এবিটির যোগসূত্রের একটা আভাস মিলেছে।
ঠিক কী ভাবে এই মিল খুঁজে পাওয়া গিয়েছে?
প্রথমে জেএমবি, তারপর নব্য জেএমবি। কিন্তু তাতেও নজর এড়ানো যায়নি গোয়েন্দাদের। অসমে আশ্রয় নিলেও একাধিক জেএমবি জঙ্গি ধরা পড়ছিলেন ভারতীয় গোয়েন্দাদের হাতে। বাংলাদেশে ফিরে গেলে শাস্তির ভয়। অন্যদিকে, এদেশে থেকে গেলে ধরা পড়ার আশঙ্কা। এই দুইয়ে মিলিয়ে প্রাক্তন জেএমবি জঙ্গিরাই কি আসলে মিশে গিয়েছিলেন আনসারুল্লা বাংলা(এবিটি)–র সঙ্গে? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের গোয়েন্দারা এই সম্ভাবনার কথা পুরোপুরি উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
এর কারণ, শুক্রবার অসম পুলিশের হাতে ধরা পড়া এবিটি জঙ্গি শাহিনুর ইসলাম। এবিটির এই জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করার পরে তাঁর কাছ থেকে নাজিবুল্লা হাকানির দুটি বই বাজেয়াপ্ত করার পরে এই ধারণা দৃঢ় হয়েছে তদন্তকারীদের। গোয়েন্দাদের দাবি, যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে জেএমবি–র নেতা নাজিবুল্লা হাকানির লেখা বই পড়ানো হতো। সেখানে কী ভাবে ভারতের বিরুদ্ধে নাশকতা করতে হবে সে সব কথাও লেখা ছিল। জামাতুল মুজাহিদিনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নাজিবুল্লা বর্তমানে জেলবন্দি।
তদন্তকারীদের বক্তব্য, ২০২০ সালে বীরভূম থেকে নাজিবুল্লাকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। সে সময়ে দক্ষিণবঙ্গে স্লিপার সেল তৈরির চেষ্টা করছিলেন তিনি। এবিটি নেতা শাহিনুরকে গ্রেপ্তার করার পরে গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন, তিনি আগে জেএমবি সদস্য ছিলেন কি না। নাকি, অসমের বরপেটা সহ একাধিক জায়গা থেকে জেএমবি জঙ্গিদের ধরপাকড় দেখে তড়িঘড়ি এবিটিতে ভিড়ে গিয়েছিলেন? তদন্তকারীরা জানতে চান,
শাহিনুর কি জেএমবির সদস্য ছিলেন নাকি আনসারুল্লা বাংলা টিমের? নাজিবুল্লার সঙ্গে কি তাঁর সরাসরি যোগাযোগ ছিল? যদি তা না থাকে তবে নাজিবুল্লার বই কেন নিজের কাছে রাখবেন তিনি। গোয়েন্দাদের বক্তব্য, সম্ভবত স্লিপার সেলকে উদ্বুদ্ধ করতে এবং তরুণ সমাজের মগজ ধোলাইয়ের মাধ্যমে তাঁদের দলে টানতে এসব বইয়ের সাহায্য নেওয়া হচ্ছিল। ইতিমধ্যেই ধৃত শাহিনুরকে জেরা করে জানা গিয়েছে, তিনি শাদ রাডির ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ফলে ধৃত এবিটি নেতা এ রাজ্যে এসেছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।