রবিবার ছুটির দিনে নন্দীগ্রামের রাজনৈতিক মহলে তোলপাড়। এ দিন তৃণমূলে যোগদান করলেন নন্দীগ্রামের গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিজেপি নেতা ও বিজেপি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য অশোক করণ, নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ দেবাশিস দাস। তাঁদের সঙ্গে বিজেপির বেশ কিছু কর্মী-সমর্থকও এ দিন তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন।
গেরুয়া শিবিরের অন্যতম ‘শক্তিশালী ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত নন্দীগ্রামে চওড়া হাসি তৃণমূল সমর্থকদের ঠোঁটে। অশোক এবং দেবাশিস দু’জনেরই অভিযোগ, নন্দীগ্রামে যে সব গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি-র ক্ষমতায় রয়েছে সেখানে দুর্নীতি হচ্ছে। বারবার বিষয়টি দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে দাবি করেছেন তাঁরা। বিজেপি নেতৃত্বের উপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন এই দুই নেতা। যদিও তাঁদের তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানকে কোনওভাবেই আমল দিতে নারাজ জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের তোলা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপি-র সহ সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘ওদের দল ছাড়ায় বিজেপির কোনও ক্ষতি হবে না।’
তবে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ দাবি করেন, ‘আগামি দিনে নন্দীগ্রামের অনেকেই তৃণমূলে যোগদান করবেন।’ উল্লেখ্য, নন্দীগ্রামের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই পরিবর্তন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের কথায়, চলতি বছর নির্বাচনে তমলুক সমবায় কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্কের ক্ষমতা তৃণমূল ধরে রাখতে পারলেও নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ৭টি আসনের প্রত্যেকটি এবং নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের সাতটি আসনের মধ্যে ৬টিতে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি সমর্থিতরা। লোকসভা নির্বাচনেও তমলুক এবং কাঁথি কেন্দ্র হাতছাড়া হয়েছিল তৃণমূলের।
যদিও কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে ১০৮টির মধ্যে ১০১টিতেই জয়ী হয় তৃণমূল, বিজেপি পায় মাত্র ৬টি আসন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের কথায়, নন্দীগ্রামে শক্তি আরও জোরালো করতে চেষ্টা করছে রাজ্যের শাসকদল। সার্বিক প্রেক্ষাপটে এই যোগদান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।