• সব ট্রেনের অভিমুখ বদল দক্ষিণেশ্বরেই, চাপ বাড়ছে মেট্রোর সময়সূচিতে
    আনন্দবাজার | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • দমদমে নয়, পরীক্ষামূলক ভিত্তিতে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর সব ক’টি ট্রেনের অভিমুখ বদল করা হচ্ছে দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজনীয় ক্রসিং নেই সেখানে। ফলে দমদম বা কবি সুভাষের তুলনায় দক্ষিণেশ্বরে ট্রেন ঘোরাতে বেশি সময় লাগছে। এতে ট্রেনের যাত্রা সম্পূর্ণ করতেও সময় বেশি লাগছে। যার প্রভাব পড়ছে মেট্রোর সার্বিক সূচিতে। সাধারণত, কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর যেতে মেট্রোর গড়ে ৫২ থেকে ৫৩ মিনিট লাগে। কিন্তু দক্ষিণেশ্বরে ট্রেন ঘোরানোর ফলে সেই সময় বেড়ে প্রায় এক ঘণ্টা হয়ে যাচ্ছে। এই কারণে ট্রেনের মোট সংখ্যাও কমাতে হয়েছে বলে অভিযোগ।

    আগে দিনে মোট ২৮৮টি ট্রেন চললেও নতুন ব্যবস্থায় সর্বাধিক ২৪৮টি ট্রেন চলছে। কিন্তু পথে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ঘটলে বাদক্ষিণেশ্বরে অভিমুখ বদলে সময় বেশি লাগলে মেট্রোর সার্বিক সূচি প্রভাবিত হচ্ছে। ফলে, যাত্রীরা প্রায়ই যথাসময়ে ট্রেন পাচ্ছেন না। কাজের দিনে ব্যস্ত সময়ে মেট্রোয় অস্বাভাবিক ভিড় হচ্ছে। ভিড়ের কারণে কোনও ট্রেন দেরিতে ছুটলে তার প্রভাব একাধিক ট্রেনের সূচিতে পড়ছে বলেও অভিযোগ।

    অতীতে দমদম থেকে কিছু ট্রেন অভিমুখ বদল করায় বিভিন্ন স্টেশনে ভিড় জমার সমস্যা মারাত্মক আকার নেয়নি। কিন্তু নতুন ব্যবস্থায় ট্রেনের সময়সূচি অনেকটাইএলোমেলো হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ বেড়েছে যাত্রীদের। শহরতলি থেকে ট্রেনে করে দমদমে আসা অনেকেই ভিড়ের চোটে দক্ষিণেশ্বর থেকে আসা মেট্রো ধরতে সমস্যায় পড়ছেন বলে অভিযোগ। যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষ ওই পরীক্ষার কারণ স্পষ্ট করেননি। কত দিন এই ব্যবস্থা চলবে, তা-ও নির্দিষ্ট ভাবে জানানো হয়নি।

    তবে অচিরেই ইয়েলো লাইনে (নোয়াপাড়া থেকে বিমানবন্দর) পরিষেবা সম্প্রসারিত হতে পারে। তাই নোয়াপাড়া স্টেশনকে চালক পরিবর্তনের জায়গা হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছেনকর্তৃপক্ষ। তাই সেখানে পৃথক ‘ক্রু লবি’ তৈরি করা হয়েছে। আগে দমদমে মেট্রোর চালক পরিবর্তন করা হত এবং সে জন্য স্টেশন লাগোয়া একটি ঘরে চালকদের সাময়িক বিশ্রামের সুবিধা ছিল।

    কিন্তু নোয়াপাড়া স্টেশনের ‘ক্রু লবি’ মূল স্টেশন থেকে বেশ খানিকটা দূরে। সেখানে প্ল্যাটফর্মে চালকদেরজন্য পৃথক ঘরের ব্যবস্থা করা যায়নি বলে অভিযোগ। ফলে, তাঁদের বিশ্রাম নিতে বাইরের ভবনে যেতে হচ্ছে। এই যাতায়াতে কিছুটা অতিরিক্ত সময় খরচ হচ্ছে।যাঁরা চালকদের দায়িত্ব ভাগ করেন, অসুবিধায় পড়েছেন তাঁরাও। পরবর্তী কালে ফের দমদম থেকে ট্রেনের অভিমুখ বদল হলেও চালক বদলের কাজে আরও বেশি সময় খরচ হবে। এতে চালকদের সাময়িক বিশ্রামের সময় কমার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।

    এই প্রসঙ্গে কলকাতা মেট্রো রেলের মেন্‌স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুজিত ঘোষ বলেন, ‘‘প্রায় ১৮০ জন চালকের ঘাটতি রয়েছে। ওই ঘাটতি পূরণ না হওয়ায় সমস্যা বাড়ছে।’’ মেট্রো রেলের প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নেরসহ-সভাপতি শুভাশিস সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘চালক নিয়োগ না করে নতুন শাখায় পরিষেবা খুলে দেওয়ায় চাপ বাড়ছে। তার মধ্যে এমন পরীক্ষা চালকদের সমস্যায় ফেলছে।’’ মেট্রো কর্তৃপক্ষ যদিও বিষয়টি পরীক্ষামূলক বলে এড়িয়ে যেতে চেয়েছেন। তাঁরা নতুন ব্যবস্থাপনা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)