• তৃণমূল সদস্যার মৃত্যু, বিধায়কের নার্সিংহোমের নথি-ফুটেজ নিল পুলিস
    বর্তমান | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: তারাপীঠের তৃণমূল সদস্যের মৃত্যুর ঘটনায় বিধায়কের নার্সিংহোমের কাগজপত্র ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করল পুলিস। তদন্তকারী পুলিস অফিসার দু’ দফায় নার্সিংহোমে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন। যদিও এই নিয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ পুলিস। তারা শুধু জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। এদিকে বিধায়কের শাস্তির দাবিতে অনড় গোটা তারাপীঠ। দলেরও একটা বড় অংশ মৃতের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে।


    গত সোমবার চিকিৎসকের গাফিলতিতে তারাপীঠের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য সুজাতা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয়। চিকিৎসক তথা দলের বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায়ের শাস্তির দাবিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে পুলিস প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন মৃতের স্বামী তথা তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায়। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিধায়কের নামে রামপুরহাট থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন তারাময়বাবু। তাঁর পাশে এলাকার তৃণমূল নেতারা দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের দাবি, ভুল চিকিৎসার জন্য ওই সদস্য অকালে মারা গেলেন। এর আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এবার প্রতিবাদ করার সময় এসে গিয়েছে। না হলে অনেকের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটবে। ঘটনায় কার্যত একঘরে হয়ে পড়েছেন বিধায়ক। দিন দুয়েক আগে তাঁরই কেন্দ্রের মাড়গ্রামে একটি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সমস্ত নেতারা উপস্থিত থাকলেও বিধায়ককে দেখা যায়নি। আমন্ত্রণপত্রে তাঁর নাম ছাপা হলেও ফ্লেক্সে ছিল না। যদিও বিধায়কের দাবি, অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ব্যস্ত থাকায় যেতে পারেননি। 


    তারায়মবাবু এফআইআরে দাবি করেছেন, ওইদিন স্ত্রীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার ১০ মিনিট পর চিকিৎসক বলেন, ‘অপারেশন সাকসেসফুল’। সেই মতো থিয়েটারের বাইরে নার্সিংহোমের এক কর্মচারী চিকিৎসা বাবদ দশ হাজার টাকা নিয়ে নেন। এরপরই ক্ষণিকের মধ্যে ছোটাছুটি শুরু হয়ে যায়। চিকিৎসক বলেন, রোগীর অবস্থা খারাপ। আইসিইউ এবং ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়েছে। তার কিছুক্ষণ পরে বলেন, রোগীর পাঁচবার স্ট্রোক হয়েছে। কিছুটা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর বলা হয়, স্ত্রী মারা গিয়েছেন। তাঁর দাবি, চিকিৎসক জোরপূর্বক ভ্রুণ নাশ করায় এই মৃত্যু হয়েছে। আরও অভিযোগ, ময়নাতদন্ত না করে তাড়াতাড়ি দেহ দাহ করতে বলেন। সেইমতো মৃতদেহ পিছনের দরজা দিয়ে বের করে দেন। তারাময়বাবু আরও দাবি করেন, রোগী হেঁটে সুস্থ অবস্থায় নার্সিংহোমে এসেছিল। সিসি ক্যামেরা খতিয়ে দেখলেই সেটা স্পষ্ট হবে। যদিও অশোকবাবু পাল্টা দাবি করেন, রোগীকে যখন নিয়ে আসা হয়, তখন তাঁর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। এমনকী অপারেশনের আগেই ওই সদস্যর চারবার হার্ট অ্যার্টাক হয়। সেই চিকিৎসা চলাকালীনই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। অপারেশন করাই যায়নি। যা কিছু ঘটেছে তাঁদের সামনেই হয়েছে। কারণ, সিসিইউ পর্যন্ত প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছিল রোগীর আত্মীয়দের। তিনি গাফিলতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। পুলিস জানিয়েছে, শুক্র ও শনিবার দু’ দফায় ওই নার্সিংহোমে গিয়ে এভিডেন্স, সিসি ক্যামেরার ফুটেজের পাশাপাশি নার্সিংহোমের কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিধায়ক বলেন, পুলিস তদন্ত করছে। আমরা তদন্তকারীদের সবরকম সহযোগিতা করছি। 
  • Link to this news (বর্তমান)