সংবাদদাতা, ময়নাগুড়ি: এক রোগীর মৃত্যুতে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতলের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল। রবিবার এই ঘটনায় মৃতার পরিবার হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিরাট বাহিনী নিয়ে হাসপাতালে আসতে হয় ময়নাগুড়ি থানার আইসি সুবল ঘোষকে। পরে পুলিস–প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বৃদ্ধার মৃত্যুর জন্য পরিবারের লোকজন চিকিত্সার গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন।
যদিও বৃদ্ধার মৃত্যুর ঘটনায় অভ্যন্তরীণ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সীতেশ বর। লিখিত অভিযোগ দায়ের হলে উপর নির্দেশমতো তদন্ত হবে বলে জানান তিনি। পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পেটের সমস্যা নিয়ে শনিবার সকালে হাসপাতালে আসেন ৬২ বছরের মন্দিরা বসু। অভিযোগ, ডায়ারিয়া আক্রান্ত বৃদ্ধা সেদিন থেকে সঠিক চিকিত্সা পাননি। পরিবার চাইছিল, শারীরিক অবস্থার কারণে বৃদ্ধাকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হোক। কিন্তু অভিযোগ, বৃদ্ধা সুস্থ রয়েছেন তাই বাড়ি নিয়ে যেতে বলেন কর্তব্যরত চিকিত্সক। যদিও পরিবারের লোকজন বাড়ি না নিয়ে মন্দিরা বসুকে চিকিত্সার জন্য হাসপাতালেই রেখে যান। রবিবার সকাল চারটা নাগাদ তাঁর পরিবারের লোকেদের কাছে খবর আসে, ওই বৃদ্ধা মারা গিয়েছেন। এরপরই পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে হাসপাতাল গিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখান। কেন রোগীর চিকিৎসা হল না, তা নিয়ে পরিবারের লোকজন প্রশ্ন তোলেন। হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। পুলিস সহ র্যাফকেও হাসপাতালে আসতে হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরে মৃতদেহটি পরিবারের লোকেদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
মৃতার মেয়ে বাসবী সোম বসু বলেন, হাসপাতালে আমার মায়ের সঠিক চিকিৎসা হয়নি। চিকিৎসক তাঁকে সঠিকভাবে দেখেননি। তিনি অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও তাঁকে সুপার স্পেশালিটিতে রেফার করা হয়নি। শুধু স্যালাইন দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে মা আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আমরা এর বিচার চাই।
ময়নাগুড়ি নাগরিক চেতনার সম্পাদক অপু রাউত বলেন, দুঃখজনক ঘটনা। হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে মাঝেমধ্যে প্রশ্ন ওঠে। কিছুদিন আগেও আমরা স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তার সঠিক তদন্ত চাইছি।
গোটা ঘটনায় আইসি বলেন, রোগী মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। আমরা খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলি। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।