রাস্তায় মিলছে না পর্যাপ্ত বাস, তাল কাটছে বর্ষশেষের আনন্দ উদযাপনে
বর্তমান | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বড়দিন থেকে ইংরেজি নববর্ষ—চলছে উৎসবের ভরা মরশুম। কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন চিড়িয়াখানা, জাদুঘর থেকে শুরু করে পার্ক স্ট্রিট, ময়দান চত্বরে। সায়েন্স সিটি, ইকো পার্কের মতো দ্রষ্টব্য স্থানগুলিও রয়েছে সেই তালিকায়। অভিযোগ, এমন সময় কলকাতার রাস্তায় মিলছে না পর্যাপ্ত বাস। শহরবাসী তো বটেই, এর জন্য ভুগতে হচ্ছে আশপাশের জেলা ও শহরতলি এলাকা থেকে কলকাতায় আসা অসংখ্য মানুষকে। সরকারি-বেসরকারি গণপরিবহণের অন্যতম ভরসা বাস-মিনিবাস পরিষেবা। কেন পর্যাপ্ত পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না? সরকারি কর্তাদের দাবি, টাকার অভাবে বহু বাসের মেরামতি দীর্ঘদিন আটকে রয়েছে। এসি ভলভো সহ সাধারণ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বাসগুলির জরুরি মেরামতি করাতে কয়েক কোটি টাকা প্রয়োজন। অর্থবর্ষ শেষ হতে আর তিন মাস বাকি। তাই এই সময়ে নবান্নের তরফে অর্থ বরাদ্দ কাটছাঁট করা হচ্ছে। ফলস্বরূপ শ’য়ে শ’য়ে বাস শহর ও শহরতলির বিভিন্ন ডিপোতে কার্যত পড়ে রয়েছে। এর প্রভাব পড়ছে পরিষেবায়। ফলে জোড়াতাপ্পি দিয়ে কোনওরকমে পরিষেবা চালু রাখা হয়েছে। বাসের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ট্রিপও কমাতে হচ্ছে। ফলে রাস্তায় সরকারি গাড়ির উপস্থিতি কমছে।
বেসরকারি বাস মালিকদের যুক্তি আবার ভিন্ন। সেক্ষেত্রেও পরোক্ষে সরকারের কোর্টেই বল ঠেলে দিচ্ছেন বাস মালিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ভাড়া বাড়ায়নি রাজ্য সরকার। করোনা পরবর্তী সময়ে কিস্তির টাকা শোধ করতে না পারায় বহু বাস ব্যাঙ্কই টেনে নিয়ে গিয়েছে। সেগুলি আর পথে নামেনি। উল্টে গত কয়েকবছরে জ্বালানি ও যন্ত্রপাতির দাম কয়েকগুণ বেড়েছে। স্বভাবতই আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের তারতম্য বেড়ে চলেছে। তাই বহু বাস মালিক দিনের পুরো ট্রিপ করাচ্ছে না। সূর্য ডুবলেই বাস গ্যারাজ করার নির্দেশ দিচ্ছেন কর্মীদের। তাই সন্ধ্যা নামলেই রাস্তা থেকে বেসরকারি বাস উধাও হয়ে যাচ্ছে। মালিকদের সংগঠনের তরফে পরিবহণ দপ্তরের কাছে সমস্যার সমাধান চেয়ে একাধিক দাবি জানানো হয়েছে। সেগুলি এখনও সরকারের বিবেচনায় রয়েছে বলে খবর। তাই পরিষেবা কিছুটা কমিয়ে মালিকরা আদতে সরকারকে বার্তা দিতে চাইছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে দু’পক্ষের এই হিসেবনিকেশের আবহে ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দ করতে বেরিয়ে ফেরার সময় বাস না পেয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে হচ্ছে তাঁদের।