• বাংলা কথা শুনে বাংলাদেশি তকমা!  মুম্বইয়ে আটক হরিশ্চন্দ্রপুরের ৯ বাসিন্দা
    বর্তমান | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, হরিশ্চন্দ্রপুর: ওড়িশার পর এবার মহারাষ্ট্র। বিজেপিশাসিত রাজ্য ক্রমেই যেন বাঙালিদের জন্য মহাবিপদ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বাংলায় কথা বলায় এবার মুম্বইয়ে পুলিসের হেনস্তার মুখে পড়লেন হরিশ্চন্দ্রপুরের ন’জন পরিযায়ী শ্রমিক। অভিযোগ, প্রায় পাঁচ ঘণ্টা থানায় আটকে রেখে মারধর করা হয় তাঁদের। জোর করে বাংলাদেশি বলে স্বীকার করানোর চেষ্টা করা হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন শ্রমিকরা। 

    পুলিস ও পরিবার সূত্রে খবর, ঘটনাটি শনিবার বিকেলের। বাংলাদেশি নাগরিক সন্দেহে মুম্বই পুলিস হরিশ্চন্দ্রপুরের ন’জন পরিযায়ী শ্রমিককে আটক করে। থানায় দু’জনকে মারধর করে কেড়ে নেওয়া হয় মোবাইল। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিস ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির সহযোগিতায় প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর ছাড়া পান পরিযায়ী শ্রমিকরা।

    পরিবার ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুরের মাটিয়ারী ও কমলাবাড়ি এলাকার প্রায় ৩৫ জন যুবক দু’মাস আগে মুম্বইয়ের বেলাপুর থানা এলাকায় জল সরবরাহের পাইপলাইনের কাজ করতে গিয়েছিলেন। শনিবার বিকেলে বেলাপুর থানার পুলিস বাংলাদেশি দাবি করে ন’জন শ্রমিককে কর্মস্থল থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে ভোটার ও আধার কার্ড দেখানো সত্ত্বেও প্রায় পাঁচ ঘণ্টা তাঁদের আটকে রাখে পুলিস।

    আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিক ওবাইদুর রহমান বলেন, দু’মাস আগে কাজ করতে মুম্বইয়ে এসেছিলাম। আমরা নিজেদের মধ্যে বাংলায় কথা বলি। তাই বাংলাদেশি নাগরিক সন্দেহে সেখানকার পুলিস আমাদের ন’জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছিল। এমনকি মারধরও করা হয়। আধার কার্ড জাল বলে দাবি করে পুলিস।

    ওবাইদুরের দাবি, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে, সেকথা জোর করে স্বীকার করানোর চেষ্টা করেছিল পুলিস। আমি এর প্রতিবাদ করি। এরপর হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে পাঁচ ঘণ্টা পর আমাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আমরা এখনও আতঙ্কে আছি।

    হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লক তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রিজিয়া সুলতানা বলেন, ওই পরিযায়ী শ্রমিকরা আমার এলাকার বাসিন্দা। তাঁরা সেখানে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেন। বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার করছে সেখানকার পুলিস। আমরা এর বিরুদ্ধে ধিক্কার জানাই। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকার বলেন, মুম্বইয়ের পুলিস যোগাযোগ করেছিল। তারা ওই  শ্রমিকদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চায়। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে শ্রমিকদের নাম, ঠিকানা ও আধার কার্ড পাঠানো হয়েছিল। এরপর ছেড়ে দেয় সেখানকার পুলিস।
  • Link to this news (বর্তমান)