সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে ভোট হয়েছিল কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন কমিটির। ভোটে ধরাশায়ী হয় বিজেপি। এ বার সেই নির্বাচনে ব্যাপক ছাপ্পা, সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীরা। কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন বাতিলের দাবিতে সোমবার আদালতের দ্বারস্থ হন বিজেপি নেতা শঙ্কর বেরা-সহ ৫১ জন বিজেপি সমর্থিত প্রার্থী।
বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীদের অভিযোগ, কন্টাই সমবায় ব্যাঙ্কের ভোটে ব্যাপক হিংসা হয়েছে এবং তা তৃণমূল নেতা সুপ্রকাশ গিরির প্রত্যক্ষ মদতে হয়েছে। হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সিসিটিভি ফুটেজ ও সমস্ত নির্বাচনী নথি সংরক্ষণের নির্দেশ দেন।
রাজ্য জানায়, সিসিটিভি ফুটেজ আগেই সংরক্ষণ করা হয়েছে। ছুটির পরে রেগুলার বেঞ্চে হবে পরবর্তী শুনানি। কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান তথা জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি বলেন, ‘ছাপ্পা ভোট দিলে বিজেপি জিতল কী করে? ওরা তো কয়েক জায়গায় জিতেওছে। বিজেপি তো ভোট বন্ধ করাতে গিয়েছিল। ভারতবর্ষের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা যে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে সমবায় ভোট হয়েছে। হারলেই বিজেপি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দোষ দেয়। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এ সব করে লাভ নেই।’
কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি অরূপকুমার দাস অবশ্য জানান, এই বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চান না। যাঁরা প্রার্থী ছিলেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরাই বলবেন। মামলাকারী শঙ্কর বেরার বক্তব্য, ‘এখানে তো ভোট লুঠ হয়েছে। আমাদের কোনও ভোটারকেই ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। যাতে পুনর্নির্বাচন হয়, তাই কোর্টে গিয়েছি।’
কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের বোর্ড দখলের জন্য সর্বশক্তি দিয়ে লড়েছে তৃণমূল, বিজেপি দুই দলই। মোট ১০৮টি আসনের মধ্যে ১০১টিতেই জেতে তৃণমূল। বিজেপি পায় ৬টি, নির্দল জেতে ১টিতে।
এই জয়ের পর কাঁথি সমবায়ের ভোটে দলের পক্ষে দায়িত্বে থাকা বিধায়ক অখিল গিরি জানিয়েছিলেন, মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরই ভরসা রাখেন। এই ফলাফল তা আরও একবার বুঝিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে বিজেপি নেতা দিব্যেন্দু অধিকারীর বক্তব্য ছিল, রাজ্যের কোথাওই স্বাভাবিক নির্বাচন হয় না। নজিরবিহীন ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে ভোট করার পরও অশান্তি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। বহু জায়গায় বিজেপি ভোটারদের বুথেই যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছিলেন। এ বার সেই কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন বাতিলের দাবিতে হাইকোর্টে প্রার্থীরা।