• ‘অনেক টাকার অঙ্কের খেলা হয়েছিল’, সন্দেশখালিতে দাঁড়িয়ে মন্তব্য মমতার
    এই সময় | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • শেখ শাহজাহানের গ্রেপ্তারি থেকে শুরু করে মহিলাদের তোলা একের পর এক অভিযোগ, বছরের শুরুতেই রাজ্য রাজনীতির চর্চার কেন্দ্রবিন্দু ছিল সন্দেশখালি। মাঝে ইছামতি দিয়ে বহু জল গড়িয়েছে। সন্দেশখালি বিতর্কের মধ্যেই বসিরহাটে লোকসভা নির্বাচনে উড়েছে সবুজ আবির। বছরের শেষ লগ্নে সেই সন্দেশখালিতেই উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চ থেকে বললেন, ‘জানি এখানে অনেক টাকার অঙ্কে খেলা হয়েছে।’ তবে অতীতের বিতর্কের রেশ জিইয়ে না রেখে শান্তির বার্তা দিলেন তিনি। মনে করিয়ে দিলেন, কোনও ঘটনা ঘটলে সেই খবর তিনি সময়েই পেয়ে যাবে।

    সোমবার সন্দেশখালির ঋষি অরবিন্দ মিশন মাঠে প্রশাসনিক সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তবে তাঁর মঞ্চে ওঠার আগেই সন্দেশখালির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আচমকাই ‘ট্যুইস্ট’।

    স্থানীয় তৃণমূল নেতা ‘সন্দেশখালি আন্দোলনে’-র অন্যতম মুখ সুজয় মণ্ডল যোগ দেন তৃণমূলে। সুজয়ের সঙ্গে সেখানকার বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের সম্পর্ক গুরু-শিষ্যের বলেই সুবিদিত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চ থেকে কী বার্তা দেন, সেই দিকে তাকিয়ে ছিল সব মহল। শুরুতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মা-বোনেদের প্রণাম জানান। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সিংহভাগজুড়েই ছিল উন্নয়ন, প্রশাসনিক পদক্ষেপের কথা। জেলায় নতুন মহকুমা হবে সেই ঘোষণা যেমন করেন তেমনই সন্দেশখালি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর কথাও মঞ্চে বলেন মমতা।

    বক্তব্যের একেবারে শেষ লগ্নে তিনি বলেন, ‘সকলে মিলেমিশে থাকবেন। দুষ্টু লোকের খপ্পরে পড়বেন না। মহিলাদের বলছি কেউ ডাকলে চলে যাবেন না।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংযোজন, ‘আমি জানি এখানে অনেক টাকার অঙ্কের খেলা হয়েছিল। পরে দেখলেন তো পুরোটাই ভাঁওতা। মিথ্যে বেশিদিন চলে না। যা হয়েছে তা মনে রাখতে চাই না। এটা দাঙ্গার জায়গা নয়। আমরা শান্তি চাই।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বার্তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

    প্রসঙ্গত, বছরের শুরুর দিকে সন্দেশখালির তৎকালীন তৃণমূল ব্লক সভাপতি শাহজাহান শেখের বাড়িতে রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে গিয়েছিল ইডি। কিন্তু সেই সময়ে তদন্তকারীদের বাধা দেন গ্রামবাসীদের একাংশ। ইডি আধিকারিকদের মারধরের অভিযোগও উঠেছিল। এই পরিস্থিতির মধ্যেই সন্দেশখালির কয়েকজন মহিলা শেখ শাহজাহানের বাহিনীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছিলেন। এর পরেই রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় পড়ে যায়। গ্রেপ্তার হন শেখ শাহজাহান।

    লোকসভা নির্বাচনেও সন্দেশখালিকে ‘ইস্যু’ করতে চেয়েছিল বিজেপি, মত রাজনৈতিক মহলের। বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের জন্য সন্দেশখালির মহিলা মুখ রেখা পাত্রকে লোকসভায় প্রার্থীও করে গেরুয়া শিবির। বঙ্গ রাজনৈতিক মহলকে চমকে দিয়ে রেখাকে ফোন করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু এই বিতর্কের মধ্যেই বসিরহাটে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম। সার্বিক প্রেক্ষাপটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা রাজনৈতিক দিক থেকেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

  • Link to this news (এই সময়)